1. admin@esomoy.com : admin :
বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:৫৭ অপরাহ্ন

বন্ধ পাটকল পুনরায় চালুর আশ্বাস প্রতিমন্ত্রীর

মালিক উজ জামান
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৩৮ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

যশোর জেলা প্রতিনিধিঃ বন্ধ ঘোষিত ২৬ পাটকলের মধ্যে ১০টি পাটকল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে পুনরায় চালুর আশ্বাস দিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।

 

 

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ পাট চাষি ও পাট ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এই আশ্বাস দেন তিনি।

 

 

এ সময় নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের বন্ধ হয়ে যাওয়া পাটকলগুলো চালু হলে আবারও সোনালি আঁশের দিন ফিরবে, কর্মসংস্থান হবে বহু মানুষের।

 

 

 

পাট পণ্যের নতুন নতুন উদ্ভাবনীর মধ্য দিয়ে পাটের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত হবে, পাশাপাশি সৃষ্টি হবে নতুন নতুন কর্মসংস্থান।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ পাট চাষি ও পাট ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এই আশ্বাস দেন।

 

 

 

 

এ সময় নেতৃবৃন্দ বলেন, বন্ধ পাটকল চালুর উদ্যোগ নিলে পাট শিল্পে ফিরে আসবে নতুন উদ্যম ও প্রাণচাঞ্চল্য। পাট পণ্যের নতুন নতুন উদ্ভাবনীর মধ্য দিয়ে পাটের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত হবে, পাশাপাশি সৃষ্টি হবে নতুন নতুন কর্মসংস্থান।

 

 

 

 

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহাবুবুল আলম, বাংলাদেশ পাট চাষি ও পাট ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল আজিজসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

 

 

 

উৎপাদন বন্ধ আড়াই বছর। তবে খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলে দায়িত্ব পালন করছেন ৯ জন উৎপাদন কর্মকর্তা। কারখানা বন্ধ থাকায় পাট কেনার প্রয়োজন নেই, কিন্তু প্রতিটি মিলে রয়েছেন একাধিক ক্রয় কর্মকর্তা।

 

 

 

 

আছেন মান নিয়ন্ত্রণ, বাজারজাতকরণ ও কারখানা তদারকি কর্মকর্তা। পাটকলগুলো পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন এমন ১০৩৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। এর মধ্যে নিরাপত্তা প্রহরী ছাড়া অন্যদের কাজ নেই। অথচ বেতন বাবদ প্রতি মাসে তাঁদের পেছনে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

 

 

 

এদিকে বিশাল জনবল থাকলেও পাটকলের নিরাপত্তায় নেওয়া হয়েছে আরও ৮২ জন আনসার সদস্য। প্রতি মাসে তাঁদের বেতন দিতে হচ্ছে ১৩ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। এটি অদূরদর্শী ও অবিবেচকের মতো কাজ বলে মন্তব্য করেছেন খুলনার নাগরিক নেতারা।

 

 

 

পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কুদরত ই খুদা বলেন, শ্রমিকদের বিদায় দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দেওয়ার মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হয়েছে, বিজেএমসির মাথাভারী প্রশাসন, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে পাটকল গুলো বন্ধ হয়েছে।

 

 

 

পাটকল বন্ধের পেছনে এখনও শ্রমিকদের দোষ দেওয়া হয়। অথচ পাটকল পরিচালনায় দূরদর্শিতার অভাব ছিল। এ জন্য বিজেএমসি বিলুপ্ত করে স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় পাটকল গুলো চালু করতে হবে। তাহলে পাটশিল্পের হারানো গৌরব ফিরে পাওয়া সম্ভব।

 

 

 

বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১ জুলাই এই ৯টি পাটকল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে বেকার হয়ে পড়েন ৭টি পাটকলের ৩৩ হাজার ৩০৬ জন শ্রমিক। এর মধ্যে স্থায়ী শ্রমিক ছিলেন ১৫ হাজার ৩০ এবং অস্থায়ী (বদলি) শ্রমিক ছিলেন ১৪ হাজার ২৭৬ জন। খালিশপুর ও দৌলতপুর জুট মিলের প্রায় ৪ হাজার দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিকের নাম বিজেএমসির তালিকায় নেই।

 

 

 

সূত্র জানায়, শ্রমিকদের বিদায় দেওয়া হলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মিলে চাকরিতে বহাল রয়েছেন। গত অক্টোবর পর্যন্ত ৯টি মিলে কর্মরত ছিলেন ১ হাজার ৪৩ জন। এর মধ্যে চারজন অবসরজনিত ছুটিতে গেছেন। তবে কোন মিলে কতজন বিজেএমসি থেকে, তা জানা যায়নি। গত আড়াই বছরে তাঁদের বেতন বাবদ মোট ব্যয় হয়েছে ১১০ কোটি টাকা।

 

 

 

 

বর্তমানে সবচেয়ে বেশি জনবল আছে ক্রিসেন্ট জুট মিলে ১৮৯ জন। এর পরই রয়েছে প্লাটিনাম ও খালিশপুর জুট মিল। পাটকল দুটিতে ১৬৮ জন করে কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। এ ছাড়া স্টার জুট মিলে ১২২ জন, জেজেআইতে ১০৭, দৌলতপুরে ৯৬, ইস্টার্নে ৮৩, কার্পেটিংয়ে ৬৬ এবং আলিম জুট মিলে ৪৪ জন কর্মরত রয়েছেন।

 

 

 

 

ক্রিসেন্ট জুট মিল ঘুরে দেখা গেছে, কারখানার ফটকে তালা ঝুলছে। এক সময়ের কোলাহলমুখর মিল এলাকায় শুনশান নীরবতা। প্রশাসনিক ভবনের সামনে রোদ পোহাচ্ছেন কয়েকজন কর্মকর্তা। ভেতরের টেবিল-চেয়ারে লোক নেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নিরাপত্তা প্রহরী জানান, প্রতিদিন সবাই আসেন, ঘুরেফিরে চলে যান।

 

 

 

ক্রিসেন্ট জুট মিলের প্রকল্পপ্রধান খান মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এখন মূল কাজ তিনটি। পাটকলের মোট ২১৩ একর জায়গা রয়েছে, এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; দ্বিতীয় অডিট আপত্তি ও মামলা নিষ্পত্তি এবং হিসাব বিভাগ ও প্রশাসনের রুটিন কাজ। কারখানা বন্ধ থাকায় যাঁদের কাজ নেই, তাঁদের অন্য কাজে দেওয়া হয়েছে।’

 

 

 

খালিশপুর জুট মিলের প্রকল্পপ্রধান খলিলুর রহমান জানান, পাটকল বন্ধ থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রোস্টার করে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্লাটিনাম জুট মিল সিবিএর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘শ্রমিকদের বাদ দিয়ে আড়াই বছর ধরে বিজেএমসি হাতি পুষছে। কর্মকর্তা একেক জনের বেতন ৫০-৬০ হাজার টাকা, কারও কোনো কাজ নেই। অথচ লোকসানের দোষ দেওয়া হয় শ্রমিকদের। পাটকল ধ্বংসের অন্যতম কারণ বিজেএমসির কর্মকর্তারা।’

 

 

 

সার্বিক বিষয় নিয়ে বিজেএমসির আঞ্চলিক সমন্বয়কারী গোলাম রব্বানী বলেন, পাটকল গুলো ইজারার মাধ্যমে চালুর চেষ্টা চলছে। এ জন্য জনবলের বিষয় নিয়ে এত দিন আলোচনা হয়নি। তা ছাড়া পাটকল বন্ধের প্রথম বছর শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করতেই অতিবাহিত হয়েছে। দ্বিতীয় বছরে অতিরিক্ত জনবলের বিষয়টি সামনে এসেছে। অনেক বিকল্প নিয়ে আলোচনা চলছে। খুব দ্রুত এ নিয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।

 

 

 

অধিকাংশ পাওনা বুঝে পেয়েছেন শ্রমিকরা :বিজেএমসি থেকে জানা গেছে, পাটকল গুলোর শ্রমিকদের অধিকাংশ পাওনা তাঁরা বুঝে পেয়েছেন। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭টি পাটকলের ১৪,৭৯৫ জন শ্রমিক নগদ ৭৬০ কোটি টাকা এবং ৬৫৮ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বুঝে পেয়েছেন। পাওনা বাকি রয়েছে ২৩৫ জন স্থায়ী শ্রমিকের।

 

 

 

এ ছাড়া ১৩ হাজার ৮৮৯ জন অস্থায়ী (বদলি) শ্রমিক পেয়েছেন ১০৮ কোটি টাকা। বাকি রয়েছেন ৩৮৭ জন শ্রমিক। খালিশপুর ও দৌলতপুর পাটকলের দৈনিকভিত্তিক ৪ হাজার শ্রমিকের পাওনার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

 

 

এস এম /এসময়

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: FT It