জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাটে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় দুটি মামলা হয়েছে। বিএনপির পদযাত্রা থেকে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে একটি এবং এছাড়া আ.লীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর ওপর হামলার অভিযোগ এনে আরেকটি মামলা করা হয়েছে।
জয়পুরহাট থানার উপ-পরিদর্শক রুবেল হোসেন বাদী হয়ে ৮১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন। গত মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) রাতেই মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। অপর দিকে বুধবার বিকেলে আ.লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাকারিয়া হোসেন রাজা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এতে ১১৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৪০০ থেকে ৫০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলাটি করেন।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন- আক্কেলপুর উপজেলার রুকিন্দিপুর মাস্টারপাড়া এলাকার আবু হেনা মোঃ মোফাখখারুল ইসলাম (২৪) ও সদরের জামালপুর কাজীপাড়া এলাকার নূর মোহাম্মদ সরদার (৪৪)। আবু হেনা ছাত্রদল নেতা ও নূর মোহাম্মদ সরদার যুবদলের কর্মী।
গত মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকেল বিকেলে শহরের রেলগেটের পশ্চিম পাশে দলীয় কার্যালয় এলাকায় বিএনপির পদযাত্রা আসে। এসময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শান্তি ও উন্নয়নের মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ শেষে রেলগেটের পূর্বপাশে দলীয় কার্যালয়ে ফিরছিলেন। সেসময় বিএনপির নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে আসবাবপত্র ও জানালা ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ পাঁচ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়েন।
এসময় বিএনপির অন্তত ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলজার হোসেন। আর আ.লীগ-ছাত্রলীগের ১৬ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন। সংঘর্ষের ঘটনায় ৬ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন ওসি হুমায়ন কবির। তবে সংঘর্ষে আহত ৩১ জন জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলজার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আমরা নেতাকর্মীরা শহরের নতুনহাট থেকে পদযাত্রা নিয়ে জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এসে জড়ো হয়েছিলাম। এসময় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিতভাবে আমাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে ভাঙচুর করেছে। আমাদের দুইজন নেতাকর্মীকে পুলিশ আটক করেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, আমরা শান্তির শোভাযাত্রা শেষে দলীয় কার্যালয়ে ফিরছিলাম। আমাদের শোভাযাত্রার পিছনে বিএনপির নেতাকর্মী ইটপাটকেট নিক্ষেপ করেছে। এতে আমাদের ১৬ জন দলীয় নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ছাত্রলীগের এক নেতা রিফাত গুরুতর আহত অবস্থায় বগুড়া মেডিকেলে ভর্তি আছেন।
জয়পুরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ন কবির মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় দুটি মামলা হয়েছে। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আর আ.লীগের পক্ষ থেকে একটি মামলা হয়েছে। দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে।
Leave a Reply