বিশেষ প্রতিনিধি : মৌলভীবাজার জেলার সদর উপজেলার পৌরসভার ৩ং ওয়ার্ডের বাসিন্দা দক্ষিণ কলিমাবাদ এলাকার বাসিন্দা শাকের আহমদ খানের উপর লামা জগন্নাথপুর এলাকার মৃত ইয়াছিন আলীর ছেলের সুমন আলী (আতিক) গং এর হামলা।
এব্যাপারে আহত শাকের আহমদ খানের বড় ভাই শামীম খান বাদী হয়ে মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় ২৩ জুলাই তারিখে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি নন এফআইআর সূত্রে জানা যায়, বাদীর ভাই বাদীর ছোট ভাই মোঃ শাকের আহমদ(৩২) এ নিকট হতে ১,৫৫,০০০ (এক লক্ষ পঞ্চান্ন হাজার) টাকা ও তার স্ত্রী সাকি বেগম (২৮) এর নিকট হতে ২,৩০,০০০ (দুই লক্ষ ত্রিশ হাজার) টাকা মোট মোট ৩,৮৫,০০০ (তিন লক্ষ পঁচাশি হাজার) টাকা বিগত ২৭/০১/২০২১ ইং তারিখে লামা জগন্নাথপুর এলাকার সুমন আলী আতিক (৩২) ধার নেয় ।
ধার নেয়া টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। উক্ত বিরোধ নিয়ে ৩ং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাহিদ হোসেন বেশ কয়েকবার শালিস বৈঠক করেন।
উক্ত বিরোধের বিষয়টি ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার ৩ং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাহিদ হোসেন মিমাংসা করে দিলেও বর্ণিত বিবাদী সুমন আলী (আতিক) শালিশ বিচারের তোয়াক্কা না করে বিদেশ চলে যায়।
বিদেশ থেকে আসার পর গত ২২ জুলাই রাত ১০ঘটিকার সময় ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাহিদ হোসেনের বাসায় পাওনা টাকা ফেরত দিবে এবং বিরোধটি মিমাংসা করা হবে বলে জানায় ।
বাদী শামীম আহমদ খানের ছোট ভাই পাওনাদার শাকের আহমদ খান কাউন্সিলারের বাসায় উপস্থিত হলে সুমন আলী আতিক পাওনা টাকা দিবে না বলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।
গালিগালাজ করতে শাকের আহমদ খান নিষেধ করলে আরও তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে শাকের ও তার পরিবারকে গালিগালাজ করে তাকে অভিযুক্ত ১। সুমন আলী আতিক (৩২), ২। আজাদ আলী (৪২), ৩। ইমান আলী ইমানী (৪০), সর্ব পিতা-মৃত ইয়াছিন আলী ও ৪। জাহেদ আহমদ পিতা- মোঃ আর্শদ আলী মিলিত হয়ে গালিগালাজ করে শাকের আহমদ খানকে এলোপাতাড়ি ভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল ঘুষি লাথি মারতে থাকে৷
বাদী শামীম আহমদ খানের ছোট ভাই শাকের আহমদ খান প্রাণ রক্ষার্থে চিৎকার করলে ১। আউওয়াল ইসলাম রনি (৩২) ২। জিলা মিয়া (৪৫) ৩। মামুন মিয়া (৩২) এগিয়ে এসে বিবাদীদের কবল থেকে শাকেরকে উদ্ধার করেন।
বিবাদী পাওনা টাকা দিবে না বলে ও কাগজ পত্র না দিলে এবং এ নিয়ে কোন মামলা মোকদ্দমা করলে শাকেরকে খুন করে লাশ গুম করে ফেলবে এবং পরিবারের ক্ষতি করবে বলে হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।
পরবর্তী ঘটনাস্থল থেকে আহত শাকের আহমদ খানকে বাদী শামীম আহমদ খান, আউয়াল হোসেন রনি ও অন্যান্য সাক্ষীদের সহযোগিতায় মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা করান ।
২৪জুলাই ২৩ইং তারিখে আহত শাকের আহমদ খানের বড় ভাই শামীম আহমদ খান বাদী হয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করলে উক্ত বিষয়টি মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ মো: হারুনুর রশীদ চৌধুরী এএসআই সেলিম মিয়াকে দায়িত্ব দিলে অভিযোগ পর্যালোচনা করে বিজ্ঞ আদালতের অনুমতির জন্য প্রেরণ করলে বিজ্ঞ আদালতের আদালতের আদেশ নং-০১, তারিখ- ৩০/০৭/২০১৩ খ্রিঃ মূলে অনুমতি প্রাপ্ত হয়ে ঘটনাস্থলে সরেজমিনে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তদন্ত কারী পুলিশ কর্মকর্তা এএসআই সেলিম মিয়া ০২/০৮/২৩ইং তারিখে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন ।
উপরোক্ত বিষয়ে, বাদী শামীম আহমদ খানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার ভাই শাকের আহমদ খান ও তার স্ত্রী সাকি আক্তারের কাছে থেকে লামা জগন্নাথপুর এলাকার মৃত ইয়াছিল আলীর ছেলে সুমন আলী আতিক ৩লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা ধার নেয়।
বেশ কয়েকবার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাহিদ হোসেনের কাছে সুমন আলী আতিক টাকার বিষয়টি স্বীকার করে এবং তিনি মিমাংসা করার চেষ্টা করেন।ঘটনার দিন সুমন আলী আতিক ও তার ভাই মিলে কাউন্সিলার নাহিদ হোসেনের বাসায় আমার ভাইকে টাকা ফেরত না দিয়ে শাকের আহমদ কে উল্টো মারধোর করে।
এনিয়ে আউয়াল হোসেন রনির সাথে কথা বললে তিনি বলেন, সুমন আলী আতিক টাকার বিষয়ে ৩লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা শাকের ও তার স্তী সাকি বেগম পাবে বলে স্বীকার করে বেশ কয়েকবার শালিস বৈঠকে উপস্থিত হয়। পরবর্তীতে টাকা ফেরত না দিয়ে বিদেশ চলে যায়। বিদেশ থেকে এসে ঘটনার দিন টাকা ফেরত দিবে বলে কাউন্সিলার নাহিদ হোসেনের বাসায় আসে। শাকের আমাকে নিয়ে যায়।
আমি কাউন্সিলারের ভিতরের রুমে গেলে সেখানে আমরা কয়েকজন বসে আলোচনায় থাকা অবস্থায় শাকেরকে আতিকসহ তার ভাই বিবাদীগন মারধোর ও গালিগালাজ করে। শাকেরের আত্ম চিৎকারে আমরা বের হয়ে তাকে উদ্ধার করি এবং হাসপাতালে নিয়ে যাই।
উক্ত বিষয়ে ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম সরকার জুনেদ এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, শাকের আহমদ খান একজন ফার্মেসী ব্যবসায়ী। উনার সাথে দীর্ঘদিনের পরিচয় তিনি খুব ভাল মনের মানুষ । সুমন আলী আতিক শাকের আহমদের ও তার স্ত্রী কাছ থেকে ৩লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা নেয়। এনিয়ে বিচার বৈঠক হলে সুমন আলী আতিক টাকার কথা স্বীকার করে কিন্তু টাকা না দিয়ে শাকের এর উপর এমন হামলা করা কোন ভাবে ঠিক হয়নি। একজন কান্সিলারের বাসায় এমন ঘটনা দুঃখজনক।
এলাকার মুস্তাক আহমদের সাথে উক্ত বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন, একজন কাউন্সিলারের বাসায় যদি বিচারপ্রার্থী এভাবে হামলার স্বীকার হয় তা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এরকম ঘটনায় কান্সিলার নাহিদ হোসেন নিজে সুমন আলী আতিক ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা উচিৎ ছিল কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় আমরা অবাক হয়ে আছি। এনিয়ে নানা কথা বার্তা চলছে।
এবিষয়ে, শামীম আহমদ, রিপন মিয়া, জুবেদ আহমদ, রিপন আহমদ, লিটন আহমদ, হাফিজ সোহেল আহমদসহ অনেকের সাথে কথা বললে তারাও টাকা পাওয়ার বিষয়টি জানেন এবং হামলার বিষয় খুবই দুঃখজনক বলে জানান।
বাদী শামীম আহমদ খানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ঘটনার বিষয়টির সত্যতা প্রকাশ করে কাউন্সিলার নাহিদ হোসেন আমাদের শান্তনা দিয়েছেন এবং তাদের পাশে আছেন বলে জানান। কিন্তু সুমন আলী আতিক এখনো আমাদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকী দিচ্ছে।
এব্যাপারে আহত শাকের আহমদের স্ত্রী সাকি বেগমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সুমন আলী আতিক আমাদের ফার্মেসীর কর্মচারী ছিল। সে আমাদের কাছ থেকে ৩লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা ধার নিয়ে এখন ফিরত দিচ্ছে না। আমাদের পাওনা টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো বিচার প্রার্থী হয়ে আমার স্বামী কাউন্সিলারের বাসায় সুমন আলী ও তার ভাইদের দ্বারা হামলার স্বীকার হন। আমাদের দুটি সন্তান রয়েছে। আমাদের দোকান রয়েছে এখন আতংকিত অবস্থায় রয়েছি। আমরা ন্যায় বিচার চাই বলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
এব্যাপারে সুমন আলী আতিকের সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে সে কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এম.চৌ:এসময়
Leave a Reply