1. admin@esomoy.com : admin :
রবিবার, ০১ অক্টোবর ২০২৩, ০৩:০৫ অপরাহ্ন

মানিকগঞ্জে সংহতি মানববন্ধন ও স্মৃতি চারণ সভা অনুষ্ঠিত

মোঃ নজরুল ইসলাম
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৩
  • ৩৩ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ কিংবদন্তী চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ ও সাংবাদিকতার প্রথিকৃত মিশুক মুণির স্মৃতি সুরক্ষায় ভাস্কয্যসহ গবেষণা যাদুঘর কেন্দ্র চাই, নিরাপদ সড়কের জন্য ঢাকা- মানিকগঞ্জ- পাটুরিয়া রেল লাইন স্থাপন করো,তারেক মাসুদ- মিশুক মুনীরসহ নিহদের স্মরণে ভাস্কর্য, স্মৃতিফলক ও গবেষণাগারসহ চলচ্চিত্র কমপ্লেক্স স্থাপন করো, রোড ডিভাইডারসহ নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করো,সড়কে প্রাণ আর নয় স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই।

 

 

 

এরকম বিভিন্ন দাবিতে-আজ মানিকগঞ্জ ঘিওর উপজেলাধীন জোকা বাসস্ট্যান্ডে সকাল ১০.০০ ঘটিকা থেকে ১২.০০ ঘটিকা পর্যন্ত মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাব,তারেক মাসুদ মিশুক মুনীর স্মৃতি সংসদ ও বারসিক এর যৌথ আয়োজনে সংহতি মানববন্ধন ও বৃক্ষরোপন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

 

 

 

এছাড়াও সংহতি জ্ঞাপন করেন স্থানীয় সংগঠন রেইনবো থিয়েটার, কবি নজরুল প্রমীলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ ও কাকজোড় গোল্ডেন স্পোডিং ক্লাব,তারুণ্য যুব সংঘ,আলোর পথ সেচ্ছাসেবী যুব সংঘের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহন করেন।

 

 

সংহতি মানববন্ধনে মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অতিন্দ্র চক্রবর্তী বিপ্লবের সভাপতিত্তে¡ ও উন্নয়নকর্মী মো. নজরুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সামাজিক,সাংস্কৃতিক ও পরিবেশ আন্দোলনের নেতা এ্যাড. দিপক কুমার ঘোষ।

 

 

 

বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন বারসিক আঞ্চলিক সমন্বয়কারি বিমল রায়। হীরালাল সেন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংঘের সভাপতি অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন, সাংবাদিক গাজী ওয়াজেদ আলম লাবু,তারেক মাসুদ মিশুক মুণির স্মৃতি পরিষদের সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক রিপন আনসারী।

 

 

আলোচনায় আরো অংশগ্রহন করেন রেইনবো থিয়েটার এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সাংস্কৃতিককর্মী জনাব গীনি আলম,ঘিওর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রামপ্রসাদ সরকার দিপু, কবি নজরুল- প্রমিলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের সাধারন সম্পাদক কবি মইন বিশ্বাস,বারসিক কর্মকর্তা সুবির কুমার সরকার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সম্পাদক আতোয়ার রহমান তোহা, বারসিক কর্মকর্তা সুবীর কুমার সরকার, তারুণ্য যুব সংঘের অনিক রাজবংশী,আলোর পথের সভাপতি মাইকেল এম আকাশ প্রমুখ।

 

 

 

বক্তারা বলেন আমরা আর সড়কে মানুষের মৃত্যু চাইনা,যানজট চাইনা,অধিক জনসংখ্যার অধিবাসী আমরা তাই দেশের মানুষকে নিরাপদে চলাচলের জন্য রেললাইন এর বিকল্প নেই। আমরা দুর্ঘটনারোধে নৌপথের সচলায়ন চাই। তাদের স্মরণে এখানে ভাস্কর্য ও চলচ্চিত্র গবেষণাকেন্দ্র নির্মাণের জোর দাবি করছি। স্মরণ সভার পর তাদের স্মৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি,বৃক্ষরোপণ ও বানিয়াজুরী গণকেন্দ্র পাঠাগারের আয়োজনে শিশুদের চিত্রাংকন অনুষ্ঠিত হয়।

 

 

 

 

 

উল্লেখ্য যে, চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আশফাক মিশুক মুনীরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১১ সালের এই দিনে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তারা নিহত হন। তাদের সাথে আরো তিনজন নিহত হন। ওই তিনজন হলেন চালক মুস্তাফিজ, তারেক মাসুদের প্রোডাকশন ম্যানেজার ওয়াসিম ও কর্মী জামাল। তারেক মাসুদ তার সহধর্মিণী ক্যাথরিন মাসুদ, মিশুক মুনীরসহ নয় সদস্যের একটি দল নতুন সিনেমা ‘কাগজের ফুল’-এর লোকেশন দেখতে মানিকগঞ্জে যান।

 

 

 

সেখান থেকে ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দেশের চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে যেতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন ‘মাটির ময়না’র পরিচালক তারেক মাসুদ। ১৯৮৯ সালে চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানকে নিয়ে ‘আদম সুরত’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন তারেক মাসুদ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর ১৯৯৫ সালে তার নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘মুক্তির গান’ ও ‘মুক্তির কথা’ (১৯৯৬) প্রশংসিত হয় আন্তজাতিক অঙ্গনেও।

 

 

 

এরপর ২০০২ সালে তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মাটির ময়না’ দেশের চলচ্চিত্রকে নিয়ে যায় আন্তজাতিক অঙ্গনে। ক্যামেরা ‘ডিরেক্টর’ হিসেবে কাজ করে যেসব বাংলাদেশী আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি পেয়েছেন, তাদের মধ্যে আশফাক মিশুক মুনীর ছিলেন অন্যতম।

 

 

 

শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর ছেলে আশফাক দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিবিসির ভিডিও গ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। সবার কাছে মিশুক মুনীর নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন তিনি। তারেক মাসুদের সিনেমা ‘রানওয়ে’র প্রধান চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেন তিনি। নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে তাদের দু’জনকে একুশে পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত করে সরকার।

 

 

 

২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও সাংবাদিক মিশুক মুনীরকে বহনকারী মাইক্রোবাসের সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স পরিবহনের একটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত ও তিনজন গুরুতর আহত হন। ওই ঘটনার পর ১৪ আগস্ট মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চৌগাছা থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল চালক জামিরকে আটক করে।

 

 

 

 

ঘিওর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) লুৎফর রহমান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স পরিবহনের চালক জামির হোসেনকে একমাত্র আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের আট মাস পর মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।

 

 

 

মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আল-মাহমুদ ফায়জুল কবীর ২০১৭ সালের ২২ ফেব্রæয়ারি তারিখে ঘোষিত রাতে বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে আদেশ দেন। রায়ের পর জামির হোসেনকে প্রথমে মানিকগঞ্জ জেলা কারাগার ও পরবর্তীতে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছিল।

 

 

 

২০২০ সালের ১ আগস্ট বাসচালক জামির হোসেন (৬০) শহীদ সোহরাওয়ার্দী হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে বন্দী অবস্থায় মারা যান।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: FT It