যশোর প্রতিনিধি : মাদক ব্যবসায়ি ও সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে যশোর শহরের ৫নং ওয়ার্ড খড়কি হাজাম পাড়ায় স্থানীয় একটি চক্র বাড়ি ঘরে লুটতরাজ, ভাংচুর ও নারী পুরুষ শিশুকে পরিকল্পিতভাবে জখম করেছে। এ অপকর্ম করতে ঐ চক্রের সদস্যরা আগেই মামলা করে জখমদের আসামি করে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই চক্রটির সদস্যরা চিহ্নিত ভূমিদস্যু, নারী ও শিশু পাচারকারি ও চোরাকারবারি বলে জোর অভিযোগ রয়েছে। আরো অভিযোগ রয়েছে, এই চক্রটি প্রভাবিত করে ভূক্তভোগীদের মামলা নিতে দেয়নি। ঐ মারামারির ঘটনায় ২৬জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২১জন কলাবাগান পাড়ার বাসিন্দা।
ভূক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর মীমাংসার কথা বলে কলাবাগান পাড়ার শাহীন, রমজানসহ কয়েক জনকে ডেকে নিয়ে যায় খড়কি হাজাম পাড়ার বাহাদুর এলাহীরা। এরপর তারা শাহিন ও রমজানকে আটকে রেখে ব্যাপক মারধোর করে। এ খবর পেয়ে শাহিনের স্ত্রী, কন্যা, বোনাই, নাতিসহ আত্মীয় স্বজনরা গেলে ডাকাত পড়েছে বলে তাদের উপর প্রায় শতাধিক লোক হামলা করে।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন, কলাবাগানপাড়ার মৃত মোহাম্মদের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪৯), শহিদুলের স্ত্রী জোস্না ( ৪০), মৃত রবিউলের স্ত্রী রিনা, জাহিদুরের স্ত্রী বন্যা, মৃত রবিউলের ছেলে রানা, শাহিনের ছেলে শুভ, শাহিনের ছেলে সাদি (১৪), শাহিনের স্ত্রী রোজিনা, রমজান, বাপ্পী, রকি, শহিদুলের ছেলে শান্ত (১২), ইমরানের ছেলে সাইমুন (৩), শহিদুলের মেয়ে স্মৃতি (২৩), তিথি প্রমুখ। এদের মধ্যে কয়েকজনের মাথায় গাছিদা, দা ছুরি, দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
বাহাদুর এলাহি রবিউল বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পায়নি তিন বছরের শিশু সাইমুন বা কিশোর সাদি শান্ত প্রমুখ।
ভূক্তভোগিরা জানায় শাহিনের মেয়ে জামাই খড়কি হাজামপাড়ায় মহুয়াদের বাড়ি ভাড়া থাকে। এই ঘটনা ইস্যু করে ওই চক্রটির সদস্যরা তালা ভেঙে বাড়িটিতে লুট তরাজ করে দিনে দুপুরে। মেমো অনুযায়ি, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় সাড়ে পাঁচলাখ টাকার মালামাল লুট হয়েছে বলে ভূক্তভোগীরা জানায়।
আহত ভূক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খড়কি হাজামপাড়ার ফারুখের ছেলে বাহাদুর, তোহিদের ছেলে এলাহি, ওয়াজেদের ছেলে পলাশ ওরফে ধলা, চান্দালির ছেলে লাদেন, শহিদ, ফরহাদের ছেলে ইমামুল, ত্যানার ছেলে চান্দালি, মেহের আলীর ছেলে পিয়াস, সাখাওয়াতের ছেলে রবিউল, ফরহাদের ছেলে মামুন, জামালের ছেলে মহিদুল, ওয়াজেদের ছেলে রাঙা, সানা, রনি, রাঙার ছেলে জিসানরা হামলা চালায়। এরা গাছিদা, ছুরি, চাকু, বার্মিজ চাকু, লাঠি, লোহার রডসহ পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে ছিল। কেননা এ ঘটনার কয়েক দিন আগে এই চক্রটি রমজান ও শাহিনসহ কয়েকজনকে মারধোর করায় শাহিন একটি মামলা করে। ওই চক্রটির সদস্যরা মামলাটি উঠিয়ে নিতে শাহিন রমজানের উপর চাপ প্রয়োগ করে। তারা রাজি না হওয়ায় ক্ষতিপূরন দিয়ে মীমাংসা করে নেবে মর্মে শহিন, রমজানকে ডেকে নিয়ে আটকে মারধোর করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শাহিন ও রমজানকে বাহাদুর, এলাহি, রবিউলরা ব্যাপক মারধোর করে। তাদের বাঁচাতে ওদের পরিবারের লোকজন এলে তাদের উপর হামলা করে রক্তাক্ত জখম করে।
অভিযোগ উঠেছে, এলাহি বাহিনীর ভয়ে শাহিনের মেয়ে জামাই তাদের ভাড়ার ঘরে যেতে পারছে না। তারা এক কাপড়ে রয়েছে গত ৬/৭ দিন যাবত। একই সাথে তারা এত মানুষ গনহারে আহত সর্ত্তেও কোতয়ালি মডেল থানা আহতদের মামলা নেয়নি। এর কারন এলাহি বাহিনীর প্রধান উপদেষ্টা বাহাদুর একটি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক। সেই প্রভাব কাজে লাগিয়ে সে ও তার দোসররা নানা অপকর্ম করে বেড়ায়। এই বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড রবিউল চিহ্নিত নারী ও শিশু পাচারকারি। সে শতাধিক নারী ও শিশুকে ভারতে পাচার করেছে বলে ভূক্তভোগিরা জানায়।
জানা যায়, বিজ্ঞ আদালতের দ্বারস্থ হন আহত ভূক্তভোগিরা। আদালত বাস্তবতা উপলদ্ধি করে দ্রুত মামলা ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আহতদের পরামর্শ দিয়েছে। সেই পরামর্শ অনুযায়ি এখন মামলার প্রস্ততি চলছে।
এম.চৌ:/এসময়
Leave a Reply