নরসিংদী জেলাপ্রতিনিধিঃ শত কষ্টের মাঝেও মা তার সন্তানকে আগলে রাখেন পরম মমতায। ঝড-বৃষ্টি, রোগ-ব্যাধি যা-ই হোক না কোনো, সন্তানের পাশে ছাযার মতো থাকেন মা। তেমনিই এক মা ৬৫ বছর বয়সী আফরোজা বেগম।
বয়সের কাছে শরীর হার মানলেও ছেলের প্রতি একটু মমতা কমেনি মায়ের। নিজেই ভালোভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। তারপরও সৌদি প্রবাস ফেরত ছেলে মিলন মিযার এই সমযে তিনিই একমাত্র ভরসা।
গত ৪ সেপ্টেম্বর নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের বাড়ৈগাও গ্রামে চানমিয়ার ছেলে মো: মিলন মিয়া (৫০) এর বাড়ীতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দেখা হয এই মা-ছেলের সঙ্গে। এলাকার কযকেজন মুরব্বী খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। গত ৭ মাস পূর্বে সৌদি আরবে প্যারালাইসিস হয়ে হাত পা অবশ হযে যায। দেশে ফিরে কিছু দিন চিকিৎসা দেওয়া হলে বাড়ীতে নিয়ে আসেন তার স্ত্রী ইয়াসমিন।
অসুস্থ সৌদি ফেরত মিলন মিযা জানান, আমি প্রায ২৫ বছর সৌদিতে ১৪/১৫ ঘন্টা কাজ করেছি জীবনের শেষ সময় একটু সুখে শান্তিতে থাকার জন্য। বিয়ে করেছি ১৯ বছর, একটা সন্তান আছে আমাদের। বিদেশ থাকাকালীন সময আমার টাকা দিযে জমি ক্রয় করলে স্ত্রীর নামে লিখে নেয়। আমার ছেলে ভবিষ্যতের দিকে তাকিযে কোন কিছু বলেনি।
এবার অসুস্থ হযে দেশে আসার পরে কৌশলে আমার সেবা যতœ, উন্নত চিকিৎসার কথা বলে জমি সহ প্রায় কোটি টাকার বাড়ী লিখে নিযেেছন। এখন সবকিছু লিখে নিযে আমাকে অমানবিক নির্যাতন চালায। ঠিক মতন খেতে দে না, ঔষুধ এনে দেয না, আমার মা, ভাই, বোনেরা আমার সেবা-যতœ করতে আসলে তাদেরকে আসতে দেয না। আমি আমার স্ত্রীর যন্ত্রণায অতিষ্ঠ হযে গেছি। ধুকে ধুকে মরতে চাই না।
খাওযা-দাওযা থেকে শুর করে প্রস্রাব-পাযখানা পরিষ্কার করেন আমার মা। অথচ বিদেশে থাকার সময আমার বউয়ের কথায় মা,বাবা,ভাই বোন আত্মীয় স্বজন তাদের জন্য কোন কিছু করতে পারিনি।
আমার অতি কষ্টের টাকায নির্মিত এই বাডেিত আমি আর থাকতে চাই না, আমি আমার মাযরে কাছে থাকতে চাই, আমাকে এখন থেকে বাঁচান। আমার ভাই স্কুল শিক্ষক বকুল আমার চিকিৎসার খোঁজ খবর নিতে আসার কারণে তার বিরদ্ধে দুটা মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এখন সে মামলার ভয়ে বাড়ীতে থাকে না।
মিলনের বাবা চানমিয়া বলেন, আমার ছেলেকে এই যন্ত্রণা হাত থেকে মুক্ত করে দিযে যান। তাকে ঠিক মত খাবার ও চিকিৎসা দেওয়া হয়না। আমি তার চিকিৎসা করাবো। তার এই অবস্থা দেখতে কস্ট লাগে।
এ বিষযে তার স্ত্রী ইয়াসমিন জানান, ডাক্তার বলছে এ রোগের আর কোন চিকিৎসা নেই, তাই বাডেিত নিযে আসছি। জায়গা সম্পত্তি উনি নিজে ইচ্ছায লিখে দিযেেছন আমি জোর করে নেইনি।
এবিষয়ে চক্রধা ইউপি চেয়ারম্যান ভারপ্রাপ্ত বেনজির আহমেদ জানান, অসুস্থ প্রবাসী ফেরত মিলন মিয়া তার মা বাবার কাছে থাকতে চায়। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে তার বাবা-মার কাছে থাকার ব্যবস্থা করে দিযিেছ।
এস এম /এসময়
Leave a Reply