1. admin@esomoy.com : admin :
বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৪:৪১ অপরাহ্ন

গোপনে খাজনা দিয়ে বাগমারায় ৪০ বিঘা খাস জমি বেহাতের চেষ্টা

ডাঃ মোঃ হাফিজুর রহমান (পান্না)
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ২২ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

রাজশাহী ব্যুরো : রাজশাহী জেলার বাগমারায় অন্তত ৪০ বিঘা সরকারি খাস জমির গোপনে খাজনা দিয়ে বেহাতের চেষ্টা করছে একটি চক্র।

 

 

উপজেলা সহকারী কমিশনার, ভূমি (এসিল্যান্ড), ইউএনও এমনকি জেলা প্রশাসকের নিকট থেকে কোনো অনুমতি না নিয়েই জমির ডিজিটাল জরিপের সময় (ডাটা এন্ট্রি) গোপনে হোল্ডিং খুলে খাজনা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে উপজেলা প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

 

 

 

বিষয়টি তদন্তে স্থানীয় তহশিলদারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এসিল্যান্ড। প্রাথমিক তদন্তে ওই জমির মালিকানা দাবি কারক সাদ্দাম হোসেন নামের এক ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া গেছে। সাদ্দামের বাড়ি জেলার পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর এলাকায়। তবে এর সঙ্গে উপজেলা ভূমি অফিসের একটি চক্র জড়িত রয়েছে বলেও তদন্তে উঠে এসেছে।

 

 

 

সূত্র মতে, সরকারি খাস জমি স্থানীয় উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অনুমতি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বড় বিহানালি ইউনিয়নে প্রায় ৪০ বিঘা খাস জমি কোনো অনুমতি বা বরাদ্দপত্র ছাড়ায় গোপনে সাদ্দাম হোসেন নামের এক ব্যক্তি খাজনা পরিশোধ করেছেন। সম্প্রতি বিষয়টি ধরা পড়ার পরে নড়েচড়ে বসে উপজেলা ভূমি অফিস।

 

 

 

সূত্রটি আরো জানায়, সম্প্রতি ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপের সময় গোপনে বাগমারার ওই ৪০ বিঘা জমির খাজনা পরিশোধ করা হয় অনলাইনে। পরবর্তিতে ওই জমির মালিক হিসেবে সাদ্দাম হোসেন নামের এক ব্যক্তির নাম অনলাইনে এন্ট্রি করা হয়।

 

 

তবে ওই জমির খাজনা পরিশোধ বা জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে অনুমতিপত্রের কোনো নথি বড়বিহানালি ইউনিয়ন পরিষদ ভূমি অফিস ও উপজেলা ভূমি অফিসের রেজিস্ট্রারের নাই। এর পর স্থানীয় এক ব্যক্তির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতের বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে সম্প্রতি ওই জালিয়াতির ঘটনাটি ধরা পড়ে।

 

 

 

একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, উপজেলা ভূমি অফিস ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের একাধিক কর্মকর্ত-কর্মচারী এ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। কয়েক লাখ টাকার বাণিজ্যও হয়েছে এ কাজটি করতে গিয়ে। একটি সংঘবদ্ধ চক্র জমিগুলো বেহাত করতে সম্প্রতি খাজনা পরিশোধ করে। গোপনে হোল্ডিংও খুলে নেয়।

 

 

অনলাইনে হোল্ডিং খুলতে স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদারের কাছে পাসওয়ার্ড থাকে। তার অনুমতি ছাড়া এটি সম্ভব নয়। কাজেই ভূমি অফিসের তহশিলদারও জড়িত এ কাজে। আবার ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও উপজেলা ভূমি অফিস যে তথ্য দিয়েছে-সেটির সঙ্গেও মিল নাই। এতেই প্রমাণ হয়, দুটি অফিসই জড়িত।

 

 

 

স্থানীয় জামিলুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘উপজেলা ও স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের একটি চক্রের সহযোগিতায় সরকারি ৪০ বিঘা জমি কোনো বরাদ্দপত্র ছাড়ায় গোপনে খাজনা পরিশোধ করা হয়েছে। ওই জমিটি বেহাত করতেই মূলত এ কাজটি করা হয়েছে। পরবর্তিতে মামলা করে জমির কাগজপত্র তৈরী করার চেষ্টা করবে ওই চক্রটি। এ কারণেই এতো বড় জালিয়াতি করা হয়েছে।’

 

 

 

এ বিষয়ে স্থানীয় বড় বিহানালি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এটি আমার সময়ে হয়নি। বছর আগের তহশিলদারের আমলে এ জালিয়াতিটা হয়েছে। এর সঙ্গে পুঠিয়ার বানেশ্বর এলাকার সাদ্দাম হোসেন নামের এক ব্যক্তি জড়িত রয়েছেন। তবে ভূমি অফিসের লোকজনও জড়িত থাকতে পারেন।

 

 

বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে যা উঠে আসবে, আমি সেটিই এসিল্যান্ড স্যারকে জানাবো।’ তিনি আরও বলেন, ‘জমি জরিপের সময় তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে অনেককেই ডেকে এনে ওই কাজ দেওয়া হয়েছিল। যারা ডাটা এন্ট্রি করেছে, তারাও জড়িত থাকতে পারে।

 

 

 

বাগমারার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমন চৌধূরী বলেন, ‘ কয়েক বছর ডিজিটাল ভূমি জরিপের সময় ভুল করেও কাজটি হতে পারে। তবে অনলাইন খাজনা পরিশোধ করা হলেও তার কোনো নথি আমাদেও কাছে নাই। এ কারণে অনলাইন থেকে ওই নামটি আমরা মুছে দিয়েছি। জমিগুলো কেউ এখনো দখল করতেও পারেনি। তার পরেও আমরা সতর্ক আছি।’

 

 

এস এম /এসময়

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: FT It