মোঃ আব্দুল হান্নান,নাসিরনগর,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রেম করে বিয়ে করার প্রায় এক বছর পর।স্বামীর সংসার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানা নেয়ার পরে আরো সাত লক্ষ টাকা জরিমানা না দেয়ায় স্বামী ইমন মিয়া( ১৭)শ্বশুর আহাম্মদ আলী (৩৯),শ্বাশুরী নাসিমা বেগম (৩৮) ও চাচা শ্বশুর মারফত আলীর (৫০) চার জনের নামে নাসিরনগর থানার নারী শিশু নির্যাতন ও অপহরন মামলা নং ১/১৪৯ তারিখ ১/১২/২০২৩ দায়ের করেছে এক গৃহবধুর পিতা আমির উদ্দিন।
ঘটাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ধরমন্ডল ইউনিয়নের ধরমন্ডল গ্রামে।
স্থানীয় এলাকাবাসী,সালীশকারক ও মামলা সুত্রে জানা গেছে,ধরমন্ডল গ্রামের আহাম্মদ আলীর ছেলে মোঃ ইমন মিয়ার( ১৭) সাথে একই গ্রামের প্রতিবেশী আমির উদ্দিনের মেয়ে নদী আক্তারের (১৩) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।প্রায় এক বছর পূর্বে দুইজনে পালিয়ে গিয়ে বিয়েও করে।ছেলে মেয়ের পর্যাপ্ত বয়স না হওয়ায় পরে দুই পক্ষের লোকজন স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ,সাবেক ও বর্তমান ইউপি সদস্যগণ মিলে এ বছরের জানুয়ারী মাসে সালীশে বসে।সালীশের সিদ্বান্ত মতে মেয়ের ভবিয্যতের জন্য তার দাদা বাছিরের নিকট পাঁচ লক্ষ টাকা জমা রাখেন ছেলের বাবা আহাম্মদ আলী।কথা থাকে মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হলে সে নিজে ওই টাকা উত্তোলন করতে পারবে।মেয়ে ছাড়া অন্য কেউ ওই টাকা উত্তোলন করতে পারবে না।ওই পাঁচ লক্ষ টাকার লেনদেনের ঘটনার বিভিন্ন শর্ত দিয়ে একটি লিখিত স্ট্যাম্পও করা হয়।ওই ষ্ট্যাম্পটি জাকির হোসেন নামক একজন বিচারকের কাছে জমা রাখা হয়। পরবর্তীতে ছেলে মেয়ের মাঝে সম্পর্কের অবনতি ঘটলে মেয়ে তার বাবার বাড়ি চলে যায়।পরে মেয়ের মা বাবা মিলে মেয়ের নামে জমি রাখার কথা বলে জামিনদার বাছিরের কাছ থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে নেয়।
এক সিসি টিভির ফুঁটেজে দেখা গেছে।পাঁচ লক্ষ টাকা নেয়ার পর। মেয়ের বাবা বা মামলার বাদী মোঃ আমির উদ্দিন। আসামী আহাম্মদ আলীর বাড়িতে গিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করে আসামীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে।বাদীর মেয়ে নদী বেগমকে ইমন অপহরণ করে নিয়েছে বলে জানাচ্ছে।তার মেয়েকে ফিরিয়ে না দিলে আসামীদের নানা ধরনের হুমকি দিতে শোনা যাচ্ছে।সিসি টিভির ফুঁটেজে এ সময় অভিযুক্ত ইমনকেও সেখানেই উপস্থিত দেখা যাচ্ছিল।পরে তার মেয়েকে আর ঘর সংসার করাবে না বলে চলে যাবার সময় আমির উদ্দিনকে বলতে শোনা যাচ্ছে আগে একবার পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়ে খাইছি,এখন আরো দশ লক্ষ টাকা নিয়ে খামু।ফুঁটেজটি এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে।
ওই ঘটনার পর তা মীমাংসার জন্য আবারো এলাকার সাহেব সর্দারগণ সালীশে বসে।এ সময় জাকির হোসেনর কাছে জমা রাখা পাঁচ লক্ষ টাকার শর্তযুক্ত ষ্ট্যাম্পটি কৌশলে বাদী পক্ষের হাতে নিয়ে নেয় তারা।পরে আবারো ছেলের বাবা আহাম্মদ আলীকে সাত লক্ষ টাকা জরিমানা করে বিচারকরা। আহম্মদ আলী সেই জরিমানার সাত লক্ষ টাকা পরিশোধ না করায় মেয়ের বাবা আমির উদ্দিন বাদী হয়ে থানা নারী শিশু নির্যাতন ও অপহরনের মামলা দায়ের করেন বলে জানান আসামী আহম্মদ আলী।
মুঠোফোনে কথা হয় সালিশে উপস্থিত বিচারক,টাকা ও ষ্ট্যাম্পের জিম্মাদার মোঃ বাছির মিয়া,জাকির হোসেন ও সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ মস্তু মিয়ার সাথে।তারা উভয়ই দুই সালীশে একবার পাঁচ লক্ষ ও আরেকবার সাত লক্ষ টাকা জরিমানার কথা স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে মামলার বাদী মোঃ আমির উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করে মামলার ও সিসি টিভির ফুঁটেজের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি রাগান্নিত কন্ঠে বলেন এ যা পারে করুখ গিয়ে।তিনি বলেন আমার কাছেও ফুঁটেজ আছে।
মুঠোফোনে মামলার বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা নাসিরনগর থানার উপ- পুলিশ পরিদর্শক মোঃ নুর আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন মামলাটি তদন্তনাধিন রয়েছে।তিন আসামী উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আসছে।একজন পলাতক রয়েছে।
মোঃ আব্দুল হান্নান
নাসিরনগর,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
০১৭১৭৩৫০৮৭৬
Leave a Reply