নড়াইল প্রতিনিধি
আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও উনয়নমূলক কাজ অব্যাহত রাখার অভিযোগ এনেছেন নড়াইল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগর সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস। সোমবার (২৫ ডিসম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য খোকন সাহা এবং জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত ২৮ নভেম্বর পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে জেলা পরিষদের বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে পৌর পরিষদ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সোমবার দুপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নিজ কক্ষে মৌখিক সংবাদ সম্মেলনে অভিযাগে জানান, প্রায় ৭ মাস পূর্ব থেকে নড়াইল পৌরসভা অবৈধভাবে নড়াইল শহরের কালিদাস ট্যাংক পুকুর বিউটিফিকেশন ও শহর কাঁচা বাজার চান্দি আধুনিকীকরণ কাজ শুরু করেছে। যে জায়গায় এসব উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে তার মধ্যে ৪ একর ২১ শতাংশ জায়গা জেলা পরিষদের। এ কাজ বন্ধ করতে গত ২ নভেম্বর জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সদরের দেওয়ানী আদালতে একটি মামলা করলে বিজ্ঞ বিচারক মোহাম্মদ এনামুল হক তপশীলভূক্ত জমিতে স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার আদেশ জারি করেন। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ তা মানছে না। দিনে কাজ বন্ধ থাকলেও রাতের আঁধারে কাজ চলছে।
জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার আবু হানিফ জানান, নড়াইল পৌরসভা মিথ্যা কাগজপত্র তৈরি করে দীর্ঘ বছর নালিশি জমির খাজনা দিয়ে আসছিল। জেলা পরিষদ এর বিরুদ্ধে ভূমি অফিসে আবেদন করলে উভয় পক্ষের এক শুনানী শেষে এ বছরের ২৫ম সহকারী কমিশনার (ভূমি) সেলিম আহম্মেদ জেলা পরিষদের পক্ষে রায় দেন। এরপর ২৯ম অনলাইনে জেলা পরিষদ নালিশি নড়াইল শহরের ৭৪নং মহিষখালা মৌজার ২নং খতিয়ানভূক্ত ৫৩৯ দাগ ও ৫২৮ দাগের ৪ একর ২১ শতাংশ জমির বাংলা ১৪১২ সন থেক ১৪৩০ সন পর্যন্ত হাল নাগাদ খাজনা পরিশোধ করেছে।
নড়াইল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আঞ্জুমান আরা বলেন, ১৯৩৯ সালে তৎকালীন যশোর ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড ই.এস.টি এক পত্রের মাধ্যমে তৎকালীন ইউনিয়ন বোর্ডকে (বর্তমান পৌরসভা) নড়াইল শহরের ৭৪নং মহিষখোলা মৌজার এস.এ ২নং খতিয়ানভূক্ত ‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ’ তপশিল বর্ণিত প্রায় ৪ একর ২১শতাংশ জমির মালিকানা প্রদান করেন। এরপর থেকে পৌরসভার সমস্ত উন্নয়নমূলক কাজ, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জায়গা ও জমি লিজ প্রদান, পৌর সভার একাধিক মার্কেট নির্মাণ এবং বাৎসরিক ইজারা প্রদান করে আসছে। এখন জেলা পরিষদ মিথ্যা মালিকানা দাবি করে পৌরসভার এসব উন্নয়ন প্রকল্প বাঁধা দিচ্ছে এবং মামলাও ঠুকে দিয়েছে। তপশীলভূক্ত জমিতে আদালতের স্থিতি অবস্থা বজায় থাকায় পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়নমূল কাজ বন্ধ রয়েছে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটাই মেনে নেব। উন্নয়নমূলক কাজের টেন্ডার দিয়েছে সরকার। এর সুফল জনগন ভোগ করবে। উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ হলে নড়াইলবাসী উন্নয়ন বঞ্চিত হবে।
তিনি বলেন, নালিশি জমির দখল ভূমি জরিপ ও আরএস রকর্ডেও পৌরসভার নামে। ২০২৩ সালের পর্চায় পৌরসভার ভূমি অফিসের কর পরিশোধ রয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, পৌরসভার বিরুদ্ধে সহকারী ভূমি কমিশনারের রায় এবং জেলা পরিষদের ভূমি কর পরিশোধের বিষয় তার জানা নেই।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস বলেন, আমি উনয়নর বিপক্ষ নই। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবে আমি তাই মেনে নেব।
Leave a Reply