ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এর বাস্তবায়নে ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন প্রকল্প, ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রুপান্তর করার প্রয়াসে বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন প্রকল্প।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এর তালিকাভুক্ত ও সংশ্লিষ্ট অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা এখানে নিয়মিত কাজ করে।
এদের মধ্যে বেশ কিছু ভুক্তভোগী প্রতিষ্ঠান জানায়, ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নে খাল কেটে কুমির এনেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
প্রনব কুমার সাহাকে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে (পিডি) নিয়োগ দেয়া হয়।
তিনি এই দপ্তরের দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন নিয়োগ বানিজ্যসহ দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িয়ে পড়লে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখে একটি অফিস আদেশ স্মারক নং- ৫৬.০০.০০০০.০৩৬.৩১.০৪৮.১৭.৬৬৫ এবং ০৫.০০.০০০০.১৩২.১৯.০০৫.২২-৯৪৮ নং প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অন্যত্র বদলিকৃত কর্মস্থলে তাকে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
কিন্তু তিনি কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে কোনো এক অদৃশ্য শক্তির ইশারায় আরো অতিরিক্ত দুইমাস ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন প্রকল্পে থেকে এই প্রকল্পকে সর্বনাশ করে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করে রীতিমতো আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছেন।
তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন এই মুহুর্তে ব্যবস্থা নিলে বেড়িয়ে আসতে পারে থলের বিড়াল।
ডিজিটাল সংযোগ প্রকল্পকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে বেশ কিছু কোম্পানী এখানে টেন্ডার জমা দেয়।
কিন্তু যাদের পপুলারিটি আছে, জনবল আছে তাদেরকে কাজ না দিয়ে ভালো অংকের টাকার বিনিময়ে অনভিজ্ঞ এবং জনবল কম এ রকম ৬০% কোম্পানীকে কাজ দেয়া হয়েছে যারা আদৌ এই কাজ সম্পন্ন করতে পারবে কিনা যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
এ বিষয়ে ইতিমধ্যে আইসিসি কমিউনিকেশন লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব সাইফুল ইসলাম বিজ্ঞ উচ্চ আদালত হাইকোর্ট ডিবিশন স্পেশাল অরিজিনাল জুড়িডিকশনে রিট পিটিশন দায়ের করেন, যার নং ৩০১/২৪ তাং- ২২/০১/২৪।
অনুসন্ধানে আরোও জানা যায়, যে সকল কোম্পানী গুলোকে কাজ দেয়া হয়েছে তাদেরকে নোহা দেওয়ার সাথে সাথে ১৫% টাকা প্রদান করা হবে সেখান থেকে আবার ৫% ব্যাংক গ্যারান্টি হিসেবে কেটে রাখা হবে। বাকী ১০% টাকা দিয়ে কাজ সম্পন্ন করবে সেই প্রত্যাশায় বেশ কিছু কোম্পানী অধীক লোভে ইডিসি পাওয়ার জন্য ৫০ লাখ থেকে ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ প্রদান করে, যার নেপথ্যে পিডি প্রনব কুমার সাহা। যিনি এই অবৈধ কার্যক্রম গুলো পরিচালনা করেন।
আবার এর মধ্যে বেশ কিছু কোম্পানীকে কাজ দেওয়ার কথা বলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রনব কুমার সাহা এবং তার চক্র তাদেরকে কাজ না দিয়ে তাদের চেয়ে যারা বেশি টাকা ঘুষ দিয়েছে তাদেরকে কাজ দিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এখানে কাজ পায়নি এরকম নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেন, কাজ না পাওয়ায় দুঃখ নেই, আমাদের আফসোস হচ্ছে এতো সুন্দর প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কিছু অপরিপক্ষ দুর্নীতিগ্রস্থ গোষ্ঠির হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
টেন্ডারে অংশগ্রহন করা কোম্পানীগুলোর যাচাই বাছাইয়ে ১০০ নাম্বারের মধ্যে টেকনিক্যাল পার্টে ৮০ এবং ফিনানশিয়াল পার্টে ২০ নাম্বার।
কিন্তু এখানে যারা পার্টিসিপেন্ট, তারা কেউ জানে না কার কি অবস্থা।
কারণ ফিনানশিয়াল পার্টটি উন্মুক্ত করলে টেকনিক্যাল কে কতো পেয়েছে তা জানা যেত।
বিষয়টি প্রকল্পদের পিডি এবং তার চক্র যার নিকট থেকে বেশি টাকা পেয়েছে তাদেরকে গণহারে যাচাই না করে কাজ দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ইডিসি বাই টেন্ডার সাবমিট করার যে ক্রাইটেরিয়া ছিল তার কোন কিছুই এই প্রকল্পে মানা হয়নি।
শুধু স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানের যে পরিকল্পনা নিয়ে সরকার প্রজেক্ট অনুমোদন করেছে তার কোন ছিটাফোটাও এর মধ্যে বাস্তবে বিদ্যমান নাই।
এই প্রজেক্ট থেকে দুর্নীতির দায়ে পূর্বেই পিডি প্রনব কুমার সাহাকে অন্যত্র বদলি করা হলেও তিনি ঝোপ বুঝে কোপ মেরে প্রজেক্টের সর্বনাশ করে সকল অপকর্মের ষোল কলা সম্পন্ন করে অন্যত্র পোস্টিং নেন।
তার উপরে যারা উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন সচিব, যুগ্মসচিব এর মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে কোন অদৃশ্য শক্তির ছোয়ায় পিডির সকল অপকর্মকে সমর্থন করেছে সেটা স্পষ্ট নয়।
এ বিষয় নিয়ে আইটি বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সম্পূর্ণ বিষয়টি নিখুঁত ভাবে খতিয়ে দেখে যারা ঘুষ বাণিজ্য ও দূর্ণীতি করেছে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণসহ ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষে কেবর মাত্র রি-টেন্ডার এর ব্যবস্থা করে প্রকৃত যোগ্য কোম্পানীগুলোকে বাছাই করে কাজের দায়িত্ব দিলে শতভাগ প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে পারে।
দুর্নীতিগ্রস্থ ও ঘুষখোর ব্যক্তিদেরকে আইনের আওতায় আনতে পারলে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যপূরণ সহজসাধ্য হবে, এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
Leave a Reply