ক্রাইম রিপোর্টারঃ
পাইসিস কর্পোরেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বারিধারা কসমোপলিটন ক্লাব, উত্তরা ক্লাব ও ঢাকা চেম্বার এর সাবেক পরিচালক রাশেদুল আহসান এর বিরুদ্ধে আর্থিক দূর্ণীতি সম্পর্কিত একটি গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, রাশেদুল আহসান এবং তার প্রয়াত পুত্র জাবের আহসান বিগত ১০ বছর যাবত একটি “Ponzi Scheme” এর সাথে গভীরভাবে জড়িত যা একটি বিনিয়োগ জালিয়াতি স্কিম।
নতুন বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে পুরাতন বিনিয়োগকারীদেরকে প্রদান করা এবং এর মধ্য থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাত করার মাধ্যমে এই স্কিমটি পরিচালিত হয়। এই স্কিমের আয়োজকরা কোন ঝুঁকি ছাড়াই অর্থ বিনিয়োগ এবং উচ্চ রিটার্ন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
রাশেদুল আহসান এবং জাবের আহসান উভয়েই সম্মিলিতভাবে যথাযথ বিনিয়োগ পদ্ধতি ছাড়াই বাংলাদেশ এবং থাইল্যান্ডের বিভিন্ন বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রায় ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলার বা ৫৫ কোটি টাকার সমান অর্থ সংগ্র করেছেন।
বিভিন্ন জনের কাছ থেকে অভিযোগ এসেছে, গত এক বছর যাবৎ বিনিয়োগকারীদেরকে তাদের অর্থ ফেরত দেওয়ার সমস্ত প্রতিশ্রুতি ব্যর্থ হয়েছে এবং বহু চেক বাউন্স করেছে সংস্থাটি।
রাশেদুল আহসান তার পরিচিত মহল থেকে যেমন অর্থ সংগ্রহ করেছেন, তেমনি নিজ সন্তানকে তার বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করার জন্য ব্যবহার করেছেন। যদিও সকল অর্থের মূল সুবিধাভোগী রাশেদুল আহসান।
এমনও জানা গেছে যে, জাবের আহসানের বিরুদ্ধে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগকারীরা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যার ফলশ্রুতিতে তার বিরুদ্ধে থাইল্যান্ডে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।
পাওনাদারদের চাপ সহ্য করতে না পেরে ২০২৩ সালের ১৯শে অক্টোবর, জাবের আহসান বারিধারা সোসাইটি লেকে আত্মহত্যা করেন।
এ ঘটনাটি বিনিয়োগকারীদেরকে হতবাক করেছে এবং একই সাথে আর্থিক ক্ষতির বিষয়টি নিয়ে ভয়াবহ ভাবে চিন্তিত করেছে।
বিনিয়োগকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে এবং যথেষ্ট পরিমাণ তথ্য প্রমাণ সাপেক্ষে আইনি তদন্ত শুরু হয়েছে অথচ রাশেদুল আহসান এবং তার পরিবার তদন্তকারীদের অসহযোগিতা এবং সময় ক্ষেপণ করে চলেছেন।
এমনকি বিনিয়োগকারীদের কোন দায় স্বীকার করতে এবং তহবিল ফেরত দিতে সরাসরি অস্বীকার করেছেন।
গত ১০ বছর যাবত এই জালিয়াতির মাধ্যমে অর্জিত বিনিয়োগকারীদের ৫৫ কোটি টাকা ব্যবহার করে রাশেদুল আহসান বারিধারা কূটনৈতিক জোনে দুইটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়, ঢাকা শহরে একাধিক জমি ক্রয়, পাইসিস কর্পোরেশনের নামে কোটি কোটি টাকার ব্যাংক দেনা শোধ, একাধিকবার বারিধারা সোসাইটি এবং বারিধারা কসমোপলিটন ক্লাবের সভাপতি পদে নির্বাচন, ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ, প্রচুর পরিমাণে জুয়া খেলা এবং ব্যয়বহুল মদ্যপানে খরচ করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ বিষয়ে বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী এসব অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাশেদুল আহসানের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
Leave a Reply