আদর্শ শিশু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের প্রতিবাদে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠীর মাহামুদকাঠীতে ক্লাস বর্জনসহ নানান কর্মসূচি পালন।
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ষড়যন্ত্রমূলকভাবে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির মাহামুদকাঠী এলাকার স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী কুচক্রীমহলের চাপে আদর্শ শিশু বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি প্রধান শিক্ষক আল মামুনকে প্রতিষ্ঠান থেকে সরিয়ে দিতে এবং অযোগ্য ও বিতর্কিত সাবেক এক শিক্ষককে নিয়োগ দিতে বাধ্য হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন অভিভাবকবৃন্দ।
এর প্রতিবাদে তারা ক্লাস বর্জন করে আসছিলেন সপ্তাহ কাল ধরে।
অভিভাবকদের অভিযোগ, জরাজীর্ণ ভগ্নদশা থেকে পাকা ভবন নির্মাণ এবং চমৎকার শিক্ষার পরিবেশ তৈরী, শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের প্রত্যয়ে শক্ত হাতে হাল ধরেছিলেন আল মামুন।
সুদীর্ঘ ১ যুগ ধরে তার ধারাবাহিক সাফল্যে ঈর্ষান্বীত হয়ে একটি কুচক্রী মহল তাকে প্রতিষ্ঠান থেকে সরিয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
এজন্য বিভন্ন ছলচাতুরীর আশ্রয় নিচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় সাবেক এক শিক্ষক শামসুদ্দোহা শিপনকে আল মামুনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবার নিয়োগ দান করতে ম্যানেজিং কমিটিকে বাধ্য করেছে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি।
এর প্রতিবাদে অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রথিতযশা দীর্ঘদিনের স্বনামধন্য তিনজন শিক্ষক ইতোমধ্যে পদত্যাগও করেছেন।
উল্লেখ্য, শামসুদ্দোহা ৮/১০ বছর সহকারী শিক্ষক ও ২০১১-১২ সাল পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
২০১২ সালে বিদ্যালয় পরিচালনায় অদক্ষতা ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে উপদেষ্টা ও পরিচালনা পরিষদ তাকে চলতি দায়িত্ব হতে অব্যাহতি প্রদান করে।
সে সময়ের সম্পর্কের জের ধরেই পরবর্তীতে এক ছাত্রীকে বিয়ে করেন তিনি। যদিও সে সংসার টেকেনি বেশি দিন।
পক্ষান্তরে করোনাকালীন সময়ে কাঠের তৈরি পুরাতন ভঙুর স্কুল ঘরটি মাটিতে মিশে ছিল।
সেই জীর্ণ দশা থেকে প্রধান শিক্ষক আল মামুন স্ব-উদ্যোগে বন্ধুমহল, আত্মীয়-স্বজন, প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় স্বনামধন্য ব্যবসায়ী ও চাকুরেদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ৩,০০০ বর্গফুটের পাকা ভবনের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে নিয়ে এসেছেন।
এছাড়াও ধর্মীয় শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব আরপ করে পাঠদান পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন এনেছেন।
সর্বোপরি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের আভাস পেয়েই আল মামুন স্বেচ্ছায় হোক বা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে কিছুদিন আগে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
এরই প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকবৃন্দ ক্লাস বর্জন শুরু করেন। তাতেও কর্তৃপক্ষের সুমতি ফিরে না আসায় তারা সন্তানদের অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য টিসি দাবী করেন।
তাদের দাবী না মানা হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনেরও চিন্তা ভাবনা করেন বলে বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে।
সর্বশেষ ৪ মার্চ ২০২৪ ইং অভিভাবকদের তোপের মুখে ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে আলোচনার মাধ্যমে আল মামুনকে পদত্যাগ না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়।
এতে পরিস্থিতি আপাততঃ কিছুটা শান্ত হলেও অভিভাবকবৃন্দ শামসুদ্দোহাকে শিক্ষক হিসেবে কোনোমতেই মেনে নিতে রাজী নন বলে জানান অধিকাংশ অভিভাবক।
তারা বলেন, এর পরেও শামসুদ্দোহাকে বহাল রাখলে আমরা আমাদের বাচ্চাদের এ স্কুলে আর রাখবো না, অন্য স্কুলে ভর্তি করাবো।
Leave a Reply