অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগে চলছে খাতামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম
নীলফামারী প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে ব্যবহৃত বিদ্যুতের বিল বকেয়া থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
কিন্তু বকেয়া পরিষদ না করেই এবং পল্লী বিদ্যুত কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই অবৈধভাবে সংযোগ দিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার অব্যাহত রেখেছেন চেয়ারম্যান।
অভিযোগ রয়েছে উপঢৌকন গ্রহণের মাধ্যমে এই বেআইনী কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে স্থানীয় বিদ্যুৎ কর্মীরা। যে কারণে এক সপ্তাহেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি তারা। এমনকি কর্তৃপক্ষ একেকজন একেক ভাষ্য দিচ্ছেন।
বর্তমানে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ অবৈধ স্বীকার করলেও কেন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দেননি।
জানা যায়, গত প্রায় এক বছর যাবত কোন বিল পরিশোধ করেনি ইউনিয়ন পরিষদ। ফলে প্রায় ৪০ হাজার টাকা বকেয়া হয়েছে।
এই বকেয়া পরিশোধে পর পর তিন বার নোটিশ দেয়া হলেও কর্ণপাত করেনি চেয়ারম্যান। পরিশেষে গত ৯ মার্চ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
এরপর বিল পরিশোধ না করেই নিজস্ব লোক দিয়ে পূনরায় সংযোগ দিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার অব্যাহত রেখেছেন চেয়ারম্যান।
অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের খবর পেয়ে সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে সরেজমিনে গেলে দেখা যায় পরিষদ ভবনে যথারীতি বিদ্যুৎ রয়েছে এবং সচিবের কক্ষে তাঁর চেয়ারে বসে হিসাব সহকারী ফরহাদ হোসেন কম্পিউটারে কাজ করছেন।
এসময় ফরহাদ হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও কিছু টাকা দিয়ে চালু রাখা হয়েছে।
কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানা পাইলট বাবু মুঠোফোন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের বিষয় একবাক্যে অস্বীকার করেন।
তিনি বলেন, পরিষদের বিদ্যুৎ কাটবে কেন, আমাদের কোন বিল বকেয়া নাই। তাহলে কেন তিন বার নোটিশ দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। এরপর বার বার কল দিলেও তিনি আর রিসিভ করেননি।
এব্যাপারে সৈয়দপুর পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড অফিসের লাইন ম্যান সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তবে চেয়ারম্যান উপরে কথা বলে বকেয়া ৪০ হাজার টাকা পরিশোধের জন্য সময় নিয়েছেন। বিল না দেয়া পর্যন্ত সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকবে। আমরা কেটে দেয়ার পর তারা নিজেরা লাগিয়ে ব্যবহার করলে তা আমার জানা নাই। যদি ঘটনা সত্য হয় তাহলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো তারা ব্যবস্থা নিবে। এর বেশি আমি কিছু বলতে পারবোনা।
বিস্তারিত জানতে কো-অর্ডিনেটর ফারুক হোসেনের সাথে মুঠোফোন কথা হলে তিনি বলেন, চেয়ারম্যান যেন প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও বড়। তাই বার বার তলব করলেও তিনি গুরুত্ব দেয়নি। তাই সংযোগটা বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এখন নিজেই সংযোগ দিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে থাকলে তা চেয়ারম্যানের বিষয়। যদি মিটারসহ সংযোগে ব্যবহার করে তবে বিল রিডিং মিটারে উঠবে। তাতে কোন সমস্যা নাই। কিন্তু আমরা সেই অনুমতিও দেয়নি। তাই এটাও অবৈধ। তাহলে এব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি কেন প্রশ্ন করলে তিনি এরিয়া ইনচার্জের সাথে কথা বলতে বলেন।
এরিয়া ইনচার্জ মঞ্জরুল ইসলামকে মোবাইল করা হলে তিনি বলেন, বকেয়া পরিশোধ না করা পর্যন্ত সংযোগ প্রদান ও বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যাবেনা। এখনও ইউপি চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ বিল দেননি। তাই আমরা নিজেরা বা অন্যকে দিয়ে সংযোগ নেয়ার অনুমতিও দেইনি। তাহলে কিভাবে ইউনিয়ন পরিষদে বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে জানতে চাইলে তিনিও আমতা আমতা করেন।
মো.মি/এসময়।
Leave a Reply