নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: ২৮ বছর ধরে নড়াইল জেলা যুব লীগের সম্মেলন হচ্ছে না। দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে হয় না পূর্ণাঙ্গ কমিটি। মেয়াদোর্ত্তীর্ণ আহবায়ক কমিটি দিয়ে চলছে সংগঠনটি। এতে যুবলীগের রাজনীতি ঝিমিয়ে পড়েছে। পরবর্তী সংগঠনে ঢুকতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়েছেন ছাত্রলীগের রাজনীতি করে আসা নেতা-কর্মীরা।
দলের নেতা-কর্মীরা বলেন,সর্বশেষ ২০০৫ সালে গঠন করা ৬৫ সদস্যদের কমিটির আহবায়ক নির্বাচিত হন বাবুল কুমার সাহা। তিনি বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ পদে থেকে তিনি ২০১৮ সাল পর্যন্ত যুবলীগের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন। ওই সালেই কমিটি ভেঙে দিয়ে মো.ওয়াহিদুজ্জামানকে আহবায়ক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট কামিটি গঠন করা হয়। ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও ওই কমিটি সম্মেলন করতে পারেননি।
জানতে চাইলে বাবুল সাহা বলেন,কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও সম্মেলনের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তাই সাবেক ছাত্র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে যুবলীগের কার্যক্রম চালিয়ে নিতে হয়।
যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাবেক ১৫ নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,১৯৯৫ সালে নড়াইল শহরের রূপগন্জ বাজারের কাপড় পট্রিতে যুবলীগের সম্মেলন হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন যুবলীগের সাবেক সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। সম্মেলন শেষে নড়াইল সার্কিট হাউসে কাউন্সিলরদের ভোটে নিজাম উদ্দীন খানকে সভাপতি ও বাবুল সাহাকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।
এরপর ২০০৫ সালে বাবুল সাহাকে আহবায়ক করে ৬৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি গঠনের ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও তারা সম্মেলন করতে পারেন নি। এ কারণে ছাত্রলীগের রাজনীতি করে আসা নেতা-কর্মীরা যুবলীগে ঢুকতে পারছেন না। ফলে তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে যুবলীগের রাজনীতিতে।
যুবলীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহবায়ক মো.মাহাফুজুর রহমান,শরিফুল ইসলাম বাবলু,আবু সুফিয়ান বাহার,মাসুদুর রহমান,আবুল কাশেমসহ বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের পক্ষে মত দিলেও তারা কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দের দিকে চেয়ে আছেন। তারা বলেন,কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যা ভালো বুঝবেন তাতেই সম্মতি আছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে,নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সুলতান মঞ্চ চত্বরে ২৮ মে জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশ। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মঈনুল হোসেন খান নিখিল, বিশেষ অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ,ফ.ম বাহাউদ্দীন নাছিম এমপি,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংহঠনিক সম্পাদক মো.মোজাম্মেল হোসেন,হুইপ মাশরাফি বিন মোর্তজা এমপি,বিএম কবিরুল হক মুক্তি এমপি,জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুবাস বোস,জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো.নিজাম উদ্দীন খান নিলু প্রমুখ।
সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি ও জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মো.ফরহাদ হোসেন বলেন,যুবলীগের ৫টি সাংগঠনিক শাখা রয়েছে। এর সদস্য সংখ্যা মোট ১৪৫ জন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,তড়িঘড়ি করে সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়ায় ৫টি সাংগঠনিক কমিটির সম্মেলন করার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। তবে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ নড়াইলে আসছেন এতেই যুবলীগের নেতা-কর্মীরা আনন্দিত। তিনি বলেন,যুবলীগে এমন নেতা-কর্মী আছেন যারা প্রতিটি ক্ষেত্রে দক্ষতার পরিচয় দিয়ে দলকে এগিয়ে নিতে সক্ষম। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে জেলা যুব লীগের কমিটি গঠনের জট এবার খুলতে যাচ্ছে।
হু.ক/এসময়
Leave a Reply