অবৈধ ড্রেজারের গর্তে পরে ১১ বছরের কিশোরের মৃত্যু।
স্টাফ রিপোর্টারঃ
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের কাচারি কান্দি ব্রিজের নিচে অবৈধ ড্রেজারের কারণে তোহা (১১) নামের এক শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে।
মঙ্গলবার (২৫ ই জুন) বিকেল আনুমানিক ৫ টার সময়ে কাচারিকন্দি ব্রিজের নিচে রাসেল মোল্লার ড্রেজার চলাকালীন সময়ে এ দূর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনদের।
তোহা বিলাশপুর ইউনিয়নের কাদির হাওলাদার এর ছোট ছেলে।
অস্থায়ী ভাবে তারা কালিগঞ্জের খেজুরবাগ বসবাস করে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ঈদ-উল -ফিতরের ছুটিতে জামাল ব্যাপারীর বাড়িতে বেড়াতে আসে তোহা ও তার মা মায়না আক্তার।
জামাল ব্যাপারী মায়না আক্তারের বোনের জামাই।
মঙ্গলবার (২৫ তারিখে) বিকেলে তোহা তার খালু বাড়ি অর্থাৎ জামাল ব্যাপারীর বাড়ির ঠিক সামনে নদীর তীরে গোসল করতে যান।
তবে নদীর তীর ঘেঁষে চলছিলো একটি অবৈধ কাটার মেশিন এবং সেটিতে নদীর পার ঘেঁষে গভীর গর্ত তৈরী হয়েছে।
ঢাকার কালিগঞ্জের খেজুরবাগে বেড়ে উঠা তোহা সাঁতার না জানায় নদীতে নেমে নদীর পাড় ধরে কিছুদূর আগালে মুহুর্তেই তলিয়ে যায় ড্রেজিংয়ের সেই খাড়া গর্তে।
তখন কাচারি কান্দি ব্রিজের উপর থেকে লোকজনের ডাক শুনে তোহার মা ও তার খালুর পরিবার সহ স্থানীয়রা ছোট্ট তোহাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে।
প্রায় ১০-১৫ মিনিট পর স্থানীয় কয়েকজন তোহাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কাচারিকন্দি এলাকায় গিয়ে দেখা যায় নিহতের মায়ের কান্না আর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছিলো পুরো গ্রাম।
এনিয়ে নিহত তোহার খালাতো ভাই পলাশ ব্যাপারী জানায়, তোহা আমার সামনে দিয়েই নদীতে গোসল করতে যায়।
কিছু সময় পর আমার খালা এসে তোহার কথা জিজ্ঞেস করলে বুঝতে পারি তোহা হয়তো পানিতে ডুবে গেছে।
পরে আমরা সবাই এবং গ্রামের লোকজন পানিতে তোহাকে খুঁজতে গেলে প্রায় ১০ মিনিট পরে মৃত অবস্থায় তোহাকে উদ্ধার করি।
তোহা ছোট বেলা থেকে ঢাকায় থাকে,ও সাঁতার জানতো না। মূলত ড্রেজারের গর্তের কারণে তোহা মারা গেছে।
এবিষয়ে বড়কান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুতফর খলিফা জানায়, আমি এ বিষয়ে অবগত ছিলাম না।
আজকে সকালে আমি যখন নয়াবাজার যাই তখন জানতে পারি এমন ১০-১১ বছরের একটি ছেলে পানিতে পরে মারা গেছে।
তবে তখনও আমার কাছে তথ্য ছিলোনা যে ছেলেটি ড্রেজারের গর্তের কারণে ডুবে গিয়েছিলো।
আমার কাছে ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে এবিষয়ে জানানো হলে কে মাটিগুলো কাটছে, কার কাছে বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।
এবিষয়ে জাজিরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হাফিজুর রহমান জানায়, আমাদের কাছে এখনও পর্যন্ত নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এঘটনায় জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তিনি জানায়, পরিবারের অভিযোগের ভিক্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মো.মি/এসময়।
Leave a Reply