সহিংসতার নির্দেশ আসে জামায়াতের ‘অবসর’ অফিস থেকে: সিটিটিসি
বাপসনিউজঃ
রাজধানীর ধানমন্ডিতে ৫/এ, সড়কে অবস্থিত ‘অবসর’ ভবনে অভিযান চালিয়েছে পুলিশের বিশেষ ইউনিট কাউন্টার টেররিজম ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)।
এ সময় সেখান থেকে ১১টি হাতবোমা, চাপাতিসহ বিভিন্ন দেশি অস্ত্র ও জিহাদি বই উদ্ধারের দাবি করেছে সংস্থাটি। তবে ভবন থেকে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
সিটিটিসি জানায়, কোটা আন্দোলনের নামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া নাশকতা, সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ছিল এই অফিস থেকে।
ঢাকা মহানগর কেন্দ্রীয় অফিস হিসেবে এই অফিসটি ব্যবহার করা হয়। আর এখান থেকে তহবিল সংগ্রহ ও সরবারহ করা হতো।
শনিবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যার পর এই অভিযান চালায় (সিটিটিসি)।
অভিযান শেষে রাতে ভবনের ভেতরেই সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সিটিটিসির প্রধান আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘ছয়তলা “অবসর” ভবনের চার তলার অর্ধেকজুড়ে জসিম উদ্দীন নামে এক আইনজীবী ভাড়া নিয়ে চেম্বার করতেন।
তিনি জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতা।
এখান থেকে গোপনে ঢাকা শহরের জামায়াতের সব কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর এলাকায় জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীরা সহিংসতায় নেতৃত্ব দেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এই অফিস থেকে সেদিন সহিংসতায় নেতত্বে দেওয়ার তথ্য দিয়েছে শিবিরের সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম।
অভিযানকালে আইনজীবীর ওই চেম্বার থেকে হামবোমা ও অস্ত্র ছাড়াও প্রচুর জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়। তবে জসিম উদ্দীনকে পাওয়া যায়নি।’
সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘এর আগে শনিবার বিভিন্ন সময় ঢাকায় বিভিন্ন এলাকা থেকে শিবিরের সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম, জামায়াত নেতা মিজানুর রহমান, জামায়াতের মহানগর কোষাধ্যক্ষ ও সদস্য আব্দুর রশিদকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এখানে অভিযান চালানো হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর এলাকায় যে নারকীয় নাশকতার ঘটনা ঘটেছে, সেটাতে রাশেদুল ইসলাম মূল নেতৃত্ব দিয়েছে।’
জিজ্ঞাসাবাদে তারা তাদের গোপন আস্তানার কথা স্বীকার করেছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর কেন্দ্রীয় অফিস হিসেবে এ অফিসটি ব্যবহার করা হয়।
এ অফিসে অনেক আলামত পেয়েছি। সম্প্রতি নাশকতায় তারা যেসব দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করেছে, ভাঙচুর, নাশকতা ও পুলিশের ওপর আক্রমণে যেসব অস্ত্র ব্যবহার করেছে, সেগুলো এখান থেকে উদ্ধার করেছি।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি স্থাপনায় যে হামলা হয়েছে, সব নির্দেশনা ও সমন্বয় করেছে এই অফিস থেকে।
বিভিন্ন নাশকতায় যারা অংশ নিয়েছে, এই অফিস থেকে তহবিল সরবরাহ করা হয়েছে।
এ ছাড়া কেন্দ্রীয়ভাবে এ অফিস থেকেই তহবিল সংগ্রহ করা করেছে। এ-সংক্রান্ত বিপুল ডকুমেন্টস পাওয়া গেছে। আমাদের তল্লাশি অভিযান অব্যাহত আছে।
যারা এসব কাজে সমন্বয় করেছিল, যারা এসব কাজে অর্থ সরবরাহ করেছিল, তাদের সবাইকে খুঁজে বের করে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।’
এক প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা এখানে যেসব ডকুমেন্টস পেয়েছি, তাতে আমরা স্পষ্ট যে এখানে থেকেই আন্দোলনের সমন্বয় করেছে।
আন্দোলনে যারা তহবিল দিয়েছে, বেশ কিছু বড় ডোনারের নাম পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবো। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় হামলা করার চেষ্টা হয়েছিল, সেটিও এই অফিস থেকে নির্দেশনা দিয়েছিল।
জঙ্গি স্টাইলে জামায়াতে ইসলামীর কার্যক্রম পরিচালিত হতো এ অফিসে। তাদের নাম-ঠিকানা গোপন করে সেখানে অফিস চলছিল গত পাঁচ বছর ধরে।’
Leave a Reply