ঝিনাইদহ থেকে মোঃ লিটন হোসেনঃ
শর্ত আরোপের গ্যাড়াকলে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের ৬ কোটি টাকার টেন্ডারে অংশ নিতে পারছেননা একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
বঞ্চিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম. এস এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার মৌসুমী আক্তার মিথিলা বাদী হয়ে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেছে।
যার বিবাদী করা হয়েছে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জনকে।
ঠিকাদারদের অভিযোগ, বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোস্তাফিজুর শর্ত আরোপ করে তার পছন্দের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য দেন-দরবার প্রায় চূড়ান্ত করেছে।
জানা গেছে, ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের জন্য গত ২৯ ডিসেম্বর ২৫০ শয্যা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ঔষুধ, যন্ত্রপাতি, ব্যান্ডেজ, গজ, কাপড়, লিলেন কাপড়, কেমিক্যাল ও আসবাপত্র সরবরাহের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়।
দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় আগামী ১৪ জানুয়ারি।
তবে শর্তের বেড়াজালে অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারছে না।
সেখানে বিভিন্ন শর্ত আরোপ করে দেওয়া হয়েছে এজন্য যাতে করে সাধারণ ঠিকাদারগণ এই কাজে অংশ নিতে না পারে।
অভিযোগ রয়েছে রাজশাহীর এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান দেনদরবার শেষ করেছে।
এমনকি ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে হাসপাতালের ই-টেন্ডারের গোপন পাসওয়ার্ড সরবরাহ করেছেন।
মাগুরার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মামুন ড্রাগর্সের প্রোপাইটার আজিজুল হক অভিযোগ করেন, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক যে শর্ত দিয়েছেন বিগত দিনে বাংলাদেশের কোনো হাসপাতালে এমন শর্ত দেওয়া হয়নি।
তিনি আরো জানান, ঠিকাদারি কাজে অংশ নেওয়ার জন্য ৯৬টি আইটেমের স্যাম্পল দিতে হবে।
কিন্তু এই স্যাম্পল নিতে ৫/৬লাখ টাকার ওপর খরচ হবে।
যদি কাজ না পাই তাহলে পরবর্তীতে কোম্পানী থেকে ওই স্যাম্পল আর ফেরৎ নেবে না।
ফলে এই কাজে আমরা অংশ নিতেও পারছি না।
বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজের মালিক মিনা মাহমুদ নবী শাহিন বলেন, ওষুধ ও লিনেন সামগ্রী কেনাকাটার জন্য ছয় কোটি টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু হাসপাতালটির প্রধান ১১ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করেন।
এতে অনেক প্রতিষ্ঠান আবেদন করতে পারছে না।
এছাড়া দরপত্রে আবেদনের জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের নিবন্ধিত সনদ থাকতে হবে, যা অযৌক্তিক।
বিশেষ কোম্পানিকে সুবিধা দিতে এমন শর্ত দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করেছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রাজশাহীর টোটন এন্টারপ্রাইজকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য ঢাকায় বসে ৮০ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন।
এ ব্যাপারে তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ও হিসাবরক্ষক ফেরদৌস হোসেনকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন দিলেও তারা ফোন রিসিভ করেনি।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ মিথিলা ইসলাম জানান, হাসপাতালের টেন্ডার সংক্রান্ত বিষয়ে আমার কোনো দায় দায়িত্ব নেই।
তাই এ বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে পারবোনা।
এসময়/