কুড়িগ্রাম থেকে আনোয়ার সাঈদ তিতুঃ
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক অভিভক্ত ঢাকা সিটি করপরেশনের ডিপুটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুস সালাম বলেছেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশ ভোটাধিকার ছাড়া চলতে পারে না। দেশকে অন্ধকারে যেতে দিতে পারিনা।
বিএনপি নির্বাচনের কথা বললে অনেকের গাত্রদাহ হয়। দেশকে স্থিতিশীল করতে অবিলম্বে নির্বাচন দিতে হবে। ভরাডুবির ভয়ে অনেকে নির্বাচন চান না। দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে কোনো না কোনো জায়গা থেকে বাতাস দেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কুড়িগ্রামের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মোঃ আব্দুস সালাম বলেন, বিএনপি দেশে অশান্তি সৃষ্টি করতে দেবে না। সরকারকে সঠিক রাস্তা দেখানোই বিএনপির উদ্দেশ্য, বিব্রত করা নয়। ৩১ দফার মধ্যেই সব সংস্কারের রূপরেখা আছে। ২০২৩ সালে এসব সংস্কারের কথা বিএনপি বলে রেখেছে। কিছু কিছু রাজনৈতিক দল ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপিকে খাটো করতে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছেন। সকল ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, গত ১৭ বছরে দেশে গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকার সংকুচিত হয়েছে। এই সময়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিএনপি আন্দোলন-সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছে। জনগণের দুঃসময়ে বিএনপি সবসময় তাদের পাশে থেকে কখনো শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, কখনো বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, আবার কখনো দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
আব্দুস সালাম আরও বলেন, এই সরকার সবার সমর্থনে তৈরি হয়েছে। এত সমর্থন থাকার পরেও দ্রব্যমূল্যের দাম কমাতে ব্যর্থ এই সরকার। দাম কমাতে না পারলে যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে হবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা চাইলেই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি রোধ ও সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নয়ন, গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনকালীন রোডম্যাপ ঘোষণা এবং রাষ্ট্রে বিরাজমান ফ্যাসিবাদী শাসনের নানা চক্রান্ত ও অপচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার দাবিতে এই গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, বিগত ৫ আগস্টের পর দেশের জনগণের মধ্যে যে প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে, তা হতাশায় পরিণত করা যাবে না। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তারেক রহমানের কঠোর প্রচেষ্টা জনগণ ও সুশীল সমাজের কাছে প্রশংসিত হচ্ছে।
এ সময় তিনি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মিদের উদ্দেশ্য বলেন, শেখ হাসিনা আপনাদের মা তিনি কেমন মা যে সন্তানদের ফেলে নিজে পরিবার নিয়ে পালিয়ে যান।আমাদের রংপুরের ভাষায় তাকে পালাটি বলা হয়,আর এই পালাটি নেত্রী দিয়ে দলও চলেনা দেশও চলবে না। তিনি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানান।
কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ মোস্তাফিজার রহমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমি সাইফুর রহমান রানা, সাবেক এমপি উমর ফারখ, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক শিক্ষাবিদ শফিকুল ইসলাম বেবু, যুগ্ম আহবায়ক, হাসিবুর রহমান হাসিব, আহবায়ক কমিটির সদস্য, সাবেক পৌর মেয়র আবু বকর সিদ্দিক ও ডাক্তার মোঃ ইউনুস আলী প্রমূখ।
গণসমাবেশে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, মুক্তিযোদ্ধা দল, মহিলা দল, জাসাস, কৃষক দল, শ্রমিক দল, উলামা দল ও মৎস্যজীবী দল, উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল নেতাকর্মীকে নিজ নিজ ব্যানারে মিছিলসহ অংশগ্রহণ করেছেন।
এসময়/