স্টাফ রিপোর্টার এস চাঙমা সত্যজিৎঃ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে ঢাকায় “আদিবাসী” ছাত্র-জনতার ওপর স্টুডেন্টস ফর সভাারেন্টি নামের উগ্রসাম্প্রদায়িক গোষ্ঠির হামলা ও সংক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশী হামলার বিচার দাবী করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার ২৫ জানুয়ারি ২০২৫ সন্ধ্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে রাবি ও রুয়েটের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচীর আয়োজন করেছে।
এনসিটিবি কর্তৃক পাঠ্যপুস্তক থেকে “আদিবাসী” শব্দ সম্বলিত গ্রাফিতি বাতিলের প্রতিবাদে ১৫ জানুয়ারি সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে এনসিটিবি ভবন ঘেরাও কর্মসূচী পালন করতে গেলে “স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি” নামের উগ্রসাম্প্রদায়িক গোষ্ঠির লোকজন হামলাা চালায়। ওই হামলার প্রতিবাদে আজ (১৬ জানুয়ারি) সংক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে মিছিল নিয়ে গেলে তাতে পুলিশ হামলা চলায়।
পর পর এই দুই হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে রাবি ও রুয়েটের শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে আজকের কর্মসূচী পালন করেছে।
মশাল মিছিল পরবর্তী বিজয় চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে চয়েস তালুকদার বলেন, ৫ই আগস্টের পরবর্তী বাংলাদেশের জনগণ আশা করেছিলো বাংলাদেশ একটি ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ হবে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি যেভাবে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা করলো তার মাধ্যমে বুঝা গেলো তারা ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ চায় না।
তুহিন চাকমা বলেন, সাম্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৪ বছরে এসেও আমরা জাতিগত স্বীকৃতি পায়নি। উল্টো ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি বাদ দিয়ে আমাদের সাথে বৈষম্য করা হয়েছে।
ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন বলেন, বাংলাদেশ বহুত্ববাদী নৃতাত্ত্বিক জাতির সাথে প্রতারণা করছে। দীর্ঘদিনের লড়াই সংগ্রামের পরবর্তী জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা একটি বৈষম্যমুক্ত দেশ চেয়েছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনাকে তিনি সুপরিকল্পিত মন্তব্য করে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবী জানান।
জুস্মিতা সরেন বলেন, নিজেদের পরিচয়হীনতায় ভুগছি আমরা। আমরা দেশদ্রোহী হলে দেশের জন্য লড়াই করতাম না।
রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিল হোসেন বলেন, দীর্ঘ ৫০ বছরের রাজনীতিতে শাসকগোষ্ঠী বিভিন্ন জাতিকে বিভাজন করে রেখেছে। এসময় তিনি হামলার নিন্দা এবং বিচারের দাবি জানান।
সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী শামীন ত্রিপুরা বলেন, আমরা সবাই উৎকন্ঠার মধ্যে অবস্থান করছি। আমাদেরকে কখনো ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, কখনো উপজাতিসহ বিভিন্ন তকমা দেওয়া হয়েছে। এসময় তিনি সকল জাতিগোষ্ঠীর সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবী জানান।
সমাবেশ থেকে ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’ নামের উগ্রসাম্প্রদায়িক সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণাসহ তাদের কর্তৃক ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র জনতার’ কর্মসূচীতে হামলার বিচার দাবী জানান বক্তারা। একই সাথে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখী ছাত্র জনতার মিছিলে পুলিশী হামলারও সুষ্ঠু বিচারের দাবী জানিয়েছেন।
এসময়/