এস চাঙমা সত্যজিৎঃ
“উগ্রসাম্প্রদায়িকতা, জাতি-বিদ্বেষ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান” শ্লোগানে রাঙামাটি সদর উপজেলার কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদ।
আজ শনিবার ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ দুপুরে ঢাকায় সংক্ষুদ্ধ আদিবাসী ছাত্র জনতার ওপর “স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টির” হামলা ও তার প্রতিবাদে সংক্ষুদ্ধ ছাত্র জনতার আয়োজিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে মিছিলে পুলিশী হামলার প্রতিবাদে এবং স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি নামক ফ্যাসিস্ট সংগঠনকে নিষিদ্ধের দাবিতে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশের আগে বেলা দেড়টায় কুদুকছড়ি নির্বানপুর বন বিহারের মূল ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করা হয়। মিছিলটি রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়ক হয়ে কুদুকছড়ি বাজার প্রদক্ষিণ করে বড় মহাপুরুম উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে মিলিত হয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদের সদস্য জুয়েল চাকমার সঞ্চালনায় ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জোসনা দেবী চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদের সহসভাপতি তেরেশা চাকমা, হরি কুমার চাকমা ও রাসেল চাকমা।
তেরেশা চাকমা বলেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের পতনের পরেও পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ঢাকায় গত ১৫ জানুয়ারি সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার এনসিটিবি ভবন ঘেরাও কর্মসূচিতে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি নামের উগ্রবাদী সংগঠন কর্তৃক হামলা চালিয়ে অনেককে আহত করা হয়েছে। আহতরা এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আর ওই হামলার প্রতিবাদে পরদিন সংক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ সেই মিছিলে জল কামান, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে হামলা চালিয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদেরকে বিচ্ছিন্নতাবাদী তকমা দিয়ে বিভাজন তৈরি করতে একটি বিশেষ স্বার্থবাদী মহল নানা ষড়যন্ত্র করছে। আমরা কখনো বিচ্ছিন্নবাদী নয়, আমরা সম্পৃক্ত হতে চাই।
তিনি রক্ত দিয়ে হলেও ন্যায্য অধিকার আদায়ের আশা ব্যক্ত করে সবাইকে আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান এবং অধিকার ছাড়া বেঁচে থাকা অর্থহীন বলে মন্তব্য করেন।
ইউনুস সরকারের কাছে তিনি স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি নামক ফ্যাসিস্ট ও উগ্রবাদী সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করা এবং আহতদের চিকিৎসা খরচ বহন ও অপরাধীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও বিচারের জোর দাবি জানান।
রাসেল চাকমা বলেন, স্বাধীনতার কয়েক দশক পরেও পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিসত্তাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়নি। হাসিনার পতনের পরে আমরা আশা করেছিলাম আমাদের অধিকার ফিরে পাবো, কিন্তু তাও হয়নি। নিজের চোখে দেখছি, ধর্ষণ, ভূমি বেদখল ও হত্যার মত জঘন্য ঘটনা। অধিকারের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
হরি কুমার চাকমা বলেন, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর নতুন সরকার আসলেও আমাদের ভূমি অধিকার, জাতিসত্তার স্বীকৃতিসহ স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার অর্জিত হয়নি। হাসিনার শাসনামলের মতো এখনো সেনা শাসন জারি রয়েছে। তিনি ঢাকায় ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারী সন্ত্রাসী ও পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন।
এসময়/