গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার রোধে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি’র ধারাবাহিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে গত ১১ আগস্ট সোমবার রাজধানী ও ঢাকার বাইরে একাধিক স্থানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ব্যাপক উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, পাইপলাইন ও সরঞ্জাম জব্দ এবং অর্থদণ্ড আরোপ করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার মিরেরটেক, হাতুরাপাড়া ও নয়াপুর এলাকায় জনাব মনিজা খাতুন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। তিতাস গ্যাসের সোনারগাঁও আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগের সহযোগিতায় পরিচালিত এ অভিযানে প্রায় ২.৫ কিলোমিটার এলাকায় ৯০০টি অবৈধ আবাসিক বার্নার এবং ১টি অবৈধ চুনা ভাট্টির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ সময় ২ ইঞ্চি ব্যাসের ১০০ ফুট এবং ১ ইঞ্চি ব্যাসের ৪০ ফুট এমএস পাইপ অপসারণ ও জব্দ করা হয়। প্লাস্টিক পাইপ ধ্বংস এবং উৎসস্থল থেকে প্রতিটি অবৈধ লাইন কিলিং/ক্যাপিং করা হয়।

একই দিনে জনাব ওমর ফারুক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মেঘনাঘাট জোনের আওতায় ভাটের চর (নতুন রাস্তা), বালুয়াকান্দি, গজারিয়া এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এখানে ২টি অবৈধ চুন কারখানা (মোট ৮টি ভাট্টি) এবং একটি চায়ের দোকানে অবৈধ গ্যাস ব্যবহার ধরা পড়ে। চায়ের দোকান মালিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং এক রেস্টুরেন্ট মালিক অনুপস্থিত থাকায় প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়। ২ ইঞ্চি ব্যাসের ২০ ফুট এমএস পাইপ এবং ৫টি স্টার বার্নার জব্দ করা হয়। অবৈধ কারখানার সংযোগ বিচ্ছিন্নের পর এক্সক্যাভেটরের সাহায্যে স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয় এবং ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ অভিযানে দৈনিক প্রায় ১৬ হাজার ঘনফুট গ্যাস সাশ্রয় হয়েছে, যার আর্থিক মূল্য আনুমানিক ২,৬০,৯০০ টাকা।

জনাব মিল্টন রায়, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে গুলশান ও বনানী বিক্রয় শাখার আওতাধীন কড়াইল বস্তির ৬টি স্পটে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১,০৫০টি অবৈধ আবাসিক ডাবল বার্নারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ সময় ৫৬০ ফুট পাইপ জব্দ করা হয়।

ভালুকা আঞ্চলিক রাজস্ব শাখার বিশেষ অভিযানে বকেয়া আদায় এবং অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এতে ৫টি আবাসিক সংযোগ থেকে মোট ৮টি ডাবল চুলা অপসারণ করা হয় এবং ৬৭,৩২০ টাকা তাৎক্ষণিকভাবে আদায় হয়।

জনাব সিমন সরকার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে গাজীপুরের সুরাবাড়ি, কাশিমপুর ও দেওয়ান মার্কেট এলাকায় ৩টি স্পটে অভিযান চালিয়ে ১৬০টি বাড়ির ৪২০টি ডাবল চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ সময় বিভিন্ন আকারের ৬১০ ফুট পাইপ এবং ১২টি অবৈধ রেগুলেটর জব্দ করা হয়।

তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ১১ আগস্ট পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে ২৯৬টি শিল্প, ৩২৫টি বাণিজ্যিক এবং ৬৩,৯৬৫টি আবাসিকসহ মোট ৬৪,৫৮৬টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। একই সময়ে ১,২২,৯৯৩টি বার্নার বিচ্ছিন্ন ও ২৪১.৫ কিলোমিটার পাইপলাইন অপসারণ করা হয়।

তিতাস গ্যাস জানিয়েছে, অবৈধ সংযোগের বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরদার করা হবে এবং এসব কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।