প্রিন্ট এর তারিখঃ Aug 25, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Aug 24, 2025 ইং
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত'র জাতীয় কাউন্সিল ২০২৫ সম্পন্ন

মোঃ শাহজাহান বাশার, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত বাংলাদেশ-এর জাতীয় কাউন্সিল-২০২৫ রাজধানী ঢাকার রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে শনিবার (২৩ আগস্ট) সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয়। দেশের শীর্ষস্থানীয় পীর-মাশায়েখ, আলেম-উলামা ও ইসলামী চিন্তাবিদদের উপস্থিতিতে দিনব্যাপী এ মহাসম্মেলনে গঠন করা হয় নতুন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কাউন্সিল শেষে শাইখুল হাদীস কাজী মুহাম্মদ মুঈন উদ্দীন আশরাফী চেয়ারম্যান এবং বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও আলেম ড. আব্দুল্লাহ আল মারুফ শাহ মহাসচিব নির্বাচিত হন।
কাউন্সিলে সভাপতিত্ব করেন পীরে তরিকত আলহাজ্ব সাঈফুদ্দীন আহমদ আল-হাসানী ওয়াল হুসাইনী মাইজভাণ্ডারী। উদ্বোধন করেন পীরে তরিকত শেখ আল্লামা সিরাজ নগরী। যৌথ সঞ্চালনায় ছিলেন খাজা আরিফুর রহমান তাহেরী, আবুল কাশেম ফজলুল হক, মাওলানা আ ন ম মাসুদ হোসাইন আল কাদেরী ও গোলাম মাহমুদ ভূঁইয়া মানিক।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত নেতৃবৃন্দ তাঁদের বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও মুসলিম বিদ্বেষী চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র ও ইসলাম বিরোধী তৎপরতা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণে ইসলামের সত্যিকারের ধারক-বাহক আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতকে উপেক্ষা করা হচ্ছে, অথচ বাতিল ও ইসলামবিরোধী শক্তির সক্রিয় অংশগ্রহণ সর্বত্র দৃশ্যমান। তারা অভিযোগ করেন, গত এক বছরে (৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে) সারাদেশে প্রায় শতাধিক মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, যা দেশের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে।
নেতারা আরও বলেন, সমাজে সন্ত্রাস, লুটতরাজ, চাঁদাবাজি, মব জাস্টিজ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা অব্যাহত রয়েছে। একটি বিশেষ মহল ইসলামি খোলস ব্যবহার করে মুসলমানদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করছে এবং ইসলামের নাম ভাঙিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইছে।
কাউন্সিলে সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি, অর্থ পাচার বন্ধ এবং পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার দাবি জানিয়ে ২৩ দফা সম্বলিত একটি ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। নেতৃবৃন্দ মনে করেন, এসব দাবি বাস্তবায়ন না হলে সমাজে ন্যায়নীতি ও সাম্য প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
কাউন্সিলে বক্তব্য রাখেন আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ মুজাদ্দেদী, আল্লামা এম এ মতিন, পীর সৈয়দ মসিহুদ্দৌলা, আল্লামা আবুল কাশেম নুরী, অধ্যক্ষ আবুল ফারাহ ফরিদ উদ্দীন, শাইখ মুফতি শফিউল আলম নিজামী, অধ্যক্ষ জয়নুল আবেদীন জুবায়ের, অধ্যক্ষ স উ ম আবদুস সামাদ, শাইখ আবু সুফিয়ান আবেদী খান আল কাদেরী, অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন আল আজহারী, অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দীন, অধ্যক্ষ ইবরাহীম আখতারী, পীর গোলামুর রহমান আশরাফ শাহ, মুফতি নাজিরুল আমিন রেজভী, ড. ইসমাইল নোমানী, মাওলানা মোশাররফ হোসেন হেলালী, পীর হারুনুর রশিদ রেজভীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত শীর্ষ আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ ও সমাজসেবকগণ।
দীর্ঘ আলোচনা ও মতামত বিনিময়ের পর নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা করা হয়। এতে শাইখুল হাদীস কাজী মুহাম্মদ মুঈন উদ্দীন আশরাফী চেয়ারম্যান, পীর আল্লামা নুরী নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং ড. আব্দুল্লাহ আল মারুফ শাহ মহাসচিব নির্বাচিত হন।
শেষে মিলাদ, কিয়াম ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে কাউন্সিলের কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারী : ESOMOY