প্রিন্ট এর তারিখঃ Jul 1, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Jun 30, 2025 ইং
রাজধানী-ঝালকাঠি অভিযানে গ্রেফতার তিন দুর্ধর্ষ ডাকাত, উদ্ধার হাইয়েস গাড়ি ও নগদ টাকা।

রাজধানী-ঝালকাঠি অভিযানে গ্রেফতার তিন দুর্ধর্ষ ডাকাত, উদ্ধার হাইয়েস গাড়ি ও নগদ টাকা।
মো.শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টারঃ
রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় ডিবি (গোয়েন্দা) পুলিশ পরিচয়ে সংঘটিত সাহসী ডাকাতির ঘটনার রহস্য উদঘাটনে নাটকীয় মোড়। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে ঢাকা ও ঝালকাঠি জেলায় পৃথক অভিযানে দুর্ধর্ষ এই ডাকাত চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে ডিএমপির মতিঝিল থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মোঃ শামিম রহমান (২৯), মোঃ মিজান রহমান (৫১) এবং রবিউল ইসলাম জুয়েল (৪২)। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস এবং নগদ ৮৯ হাজার টাকা।
জানা যায়, গত শুক্রবার (২৭ জুন ২০২৫) রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় এক ব্যবসায়ীর ৩০ লক্ষ টাকা লুট করে পালিয়ে যায় একদল দুর্বৃত্ত, যারা নিজেদের গোয়েন্দা পুলিশের সদস্য পরিচয় দেয়। ঘটনার পরই ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মতিঝিল থানায় অভিযোগ করেন এবং পুলিশ তৎপর হয়।
ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে পুলিশ একটি চৌকস তদন্ত দল গঠন করে। তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে টানা তিন দিন ব্যাপী অভিযান পরিচালনা করে তারা প্রথমে ঢাকায় ও পরে ঝালকাঠিতে অভিযান চালায়।
অভিযানে প্রথমে রাজধানীর এক এলাকা থেকে মোঃ শামিম রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। তার হেফাজত থেকেই উদ্ধার করা হয় ডাকাতির সময় ব্যবহৃত একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস। পরবর্তীতে ঝালকাঠিতে অভিযান চালিয়ে ধরা হয় মোঃ মিজান রহমান ও রবিউল ইসলাম জুয়েলকে। মিজানের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় নগদ ৮০ হাজার টাকা এবং জুয়েলের কাছ থেকে ৯ হাজার টাকা।
মতিঝিল থানার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, “এই ডাকাতি ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং সংঘবদ্ধ চক্রের অংশ। তারা ব্যবসায়ীকে টার্গেট করে ডিবি পরিচয়ে তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে টাকা ছিনিয়ে নেয়। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে যে এরা বিভিন্ন সময় একই কায়দায় আরও কিছু ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে এবং বাকী লুণ্ঠিত অর্থ উদ্ধার ও চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
গ্রেফতারকৃত তিন আসামির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় পৃথক পৃথক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, চক্রটির আর্থিক লেনদেন ও পূর্ব অপরাধের রেকর্ড যাচাই করা হচ্ছে। প্রয়োজনে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদও করা হবে।
ঘটনার পর মতিঝিলসহ আশপাশের এলাকায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই বলছেন, “ডিবি পুলিশ পরিচয়ে যদি কেউ এভাবে ডাকাতি করে, তাহলে সাধারণ মানুষ কীভাবে বুঝবে কে আসল, কে নকল?”
সাধারণ নাগরিকরা অনুরোধ করেছেন, যেন কোনো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় যাচাইয়ের সুযোগ সাধারণ মানুষের থাকে এবং ভুয়া পরিচয়ে অপরাধ সংঘটনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
এসময়/
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারী : ESOMOY.COM