মোঃ শাহজাহান বাশার ,সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
কুমিল্লার তিতাসে পরকীয়ার জেরে মো. নজরুল ভূইয়া (৩৫) নামের এক যুবককে নৃশংসভাবে হত্যা করে লাশ খণ্ডিত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক দম্পতিকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
নিহত নজরুল উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের শাহাবৃদ্ধি গ্রামের মো. হানিফ ভূইয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি বাজারে দোকান চালাতেন। আটককৃতরা হলেন একই ইউনিয়নের মজিদপুর গ্রামের নজু মিয়ার ছেলে হোসেন (৩০) ও তার স্ত্রী সৃতি আক্তার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৬ আগস্ট রাত ১০টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন নজরুল। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ মেলেনি এবং ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। নিখোঁজের ঘটনায় নিহতের বাবা তিতাস থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নজরুলের মোবাইলের কললিস্ট পর্যালোচনা করে পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে হোসেন ও তার স্ত্রীকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা নজরুলকে কুপিয়ে হত্যা করে বস্তাবন্দি করে খালে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করে।
আটক সৃতি আক্তার বলেন, “নজরুল আমাকে প্রায়ই ফোন দিয়ে বিরক্ত করতো। কয়েকদিন আগে স্বামীর অনুপস্থিতিতে আমার ঘরে এসে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। বিষয়টি স্বামীকে জানালে তার পরিকল্পনা অনুযায়ী ৬ আগস্ট রাতে নজরুলকে ফোন করে ডেকে আনি। সে ঘরে প্রবেশ করলে স্বামী পেছন থেকে এসে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে লাশ বস্তাবন্দি করে খালে ফেলে দিই।”
নিহতের বাবা অভিযোগ করে বলেন, “আমার ছেলের বিয়ের জন্য একসময় এ মেয়ের পরিবারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, কিন্তু তারা রাজি হয়নি। পরে তারা মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেয়। পরবর্তীতে আমার ছেলেরও বিয়ে হয় এবং তার এক ছেলে-মেয়ে রয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই নারী-পুরুষ মিলে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে।”
তিতাস থানার ওসি শহিদ উল্যাহ বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নজরুলকে কুপিয়ে চার টুকরো করে চারটি বস্তায় ভরে খালে ফেলার কথা স্বীকার করেছে। ইতোমধ্যে নদী থেকে দুটি হাত উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি অংশ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।”
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ বলছে, হত্যাকাণ্ডের পেছনে পরকীয়া ও প্রতিশোধের বিষয়টি স্পষ্ট, তবে ঘটনাটি আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।