সুজন আহমেদ
মোঃসুজন আহমেদ
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় চলতি মৌসুমে খিরা চাষে দেখা দিয়েছে বাম্পার ফলন। অনুকূল আবহাওয়া, রোগবালাই কম হওয়া এবং কৃষকদের সঠিক পরিচর্যার ফলে এ উৎপাদন স্থানীয় কৃষিতে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে। বাজারে খিরার চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় কৃষকদের মুখে এখন হাসি ফুটেছে, চাঙ্গা হয়ে উঠেছে গ্রামীণ অর্থনীতি।
স্থানীয় কৃষক ইন্তাজ আলী জানান, এ বছর আবহাওয়া একেবারেই খিরা চাষের পক্ষে ছিল। রোগবালাই কম থাকায় উৎপাদন গতবারের তুলনায় বেশি হয়েছে। তিনি বলেন, “প্রতি বিঘায় ৬০ থেকে ৭০ মণ পর্যন্ত খিরা উঠছে, যা আমাদের প্রত্যাশারও বেশি।”
বর্তমানে বাজারে দেশি খিরা ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে কৃষকেরা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি লাভ করছেন। ফলে নতুন করে কৃষকদের মধ্যে খিরা চাষে আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে।
উল্লাপাড়ার কয়ড়া ও মোহনপুর ইউনিয়নের কৃষক রফিকুল ইসলাম ও আশরাফুল ইসলাম জানান, খিরা চাষে সময় কম লাগে এবং শ্রম খরচও তুলনামূলক কম। অন্যান্য সবজি কিংবা ধানের চেয়ে খিরায় লাভ বেশি হওয়ায় আগামী মৌসুমে তারা আরও বেশি জমিতে খিরার আবাদ করার পরিকল্পনা করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমী জানান, কৃষকদের সফলতা ধরে রাখতে নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সার, বীজ ও প্রশিক্ষণও অব্যাহত রয়েছে। তিনি জানান, এ বছর রবি মৌসুমে খিরা ও শসার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬০ হেক্টর, কিন্তু কৃষকদের আগ্রহে তা বেড়ে ৩৬৫ হেক্টরে পৌঁছেছে।
বাম্পার ফলন ও বাজারে ভালো দাম মিলিয়ে উল্লাপাড়ার কৃষকেরা এখন দারুণ উৎসাহিত। কৃষক থেকে ব্যবসায়ী—সবার কাছে খিরা চাষ এখন লাভজনক ফসল হিসেবে গুরুত্ব পাচ্ছে। আগামী বছর আরও বেশি জমিতে খিরার আবাদ করার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন অনেক কৃষক।
উল্লাপাড়ায় খিরাকে ঘিরে এখন উৎসবের আমেজ বইছে—ভালো ফলন ও ন্যায্যমূল্যের সমন্বয়ে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে স্থানীয় কৃষকদের জন্য।
