অযত্ন-অবহেলার অস্তিত্ব সংকটে নলছিটির সম্ভাবনাময় হাড়িখালি গ্রাম।
আমির হোসেন, ঝালকাঠিঃ
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি ইউনিয়নের শিল্পির আঁকা ছবির মত ছোট্ট একটি গ্রাম হাড়িখালী। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এই গ্রামটিকে মডেল গ্রামে রূপান্তরের অপার সম্ভাবনা থাকলেও, উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে অনেকটাই বঞ্চিত হয়ে আছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে গ্রামের দক্ষিণ পাশের রাস্তাগুলো এমন অবস্থার সৃষ্টি করে যে, সাধারণ মানুষ গামছা বা লুঙ্গি ছাড়া বাহিরে বের হওয়াই দায়!
রাস্তাঘাট ও কালভার্ট নির্মাণে বিভিন্ন সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবায়নে দেখা যায়নি কার্যকর কোনো উদ্যোগ। প্রতিটি নির্বাচনের সময় ‘উন্নয়ন’ শব্দটি উচ্চারিত হলেও, কার্যত তা হয়ে উঠেছে শুধু ব্যক্তিস্বার্থ পূরণের হাতিয়ার।
এই গ্রামে রয়েছে একটি প্রাইমারি স্কুল এবং “হাড়িখালী দারুল উলুম ফাজিল সিনিয়র মাদ্রাসা”। কিন্তু দুর্ভোগ পোহাতে হয় ছোট ছোট কোমলমতি শিক্ষার্থীদের, যাদেরকে বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে, প্রাণ ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। গ্রামে যদি ৫টি কালভার্ট ও ৪টি রাস্তার উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়িত হয়, তাহলে এই শিশুরা নিরাপদে স্কুলে যাতায়াত করতে পারবে এবং উচ্চ শিক্ষার মাধ্যমে নিজেদের জীবনমান উন্নত করতে সক্ষম হবে।
চলাচলের উপযুক্ত অবকাঠামোর অভাবে গ্রামের অধিকাংশ মানুষ গ্রাম ছেড়ে শহরমুখী হয়েছে। একপ্রকার 'পুরুষশূন্য' হয়ে পড়েছে হাড়িখালী। তবুও উন্নয়নের বিষয়ে কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুললে,বিগত দিনে রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়ে মুখ বন্ধ করতে বাধ্য হন।
হাড়িখালীর মতো সম্ভাবনাময় একটি গ্রাম উন্নয়নের স্বপ্নে বাঁচে, কিন্তু অভিভাবকহীন বাস্তবতায় প্রতিনিয়ত হারিয়ে যাচ্ছে সেই স্বপ্ন। অবহেলিত হাড়িখালীর মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকার বাসিন্দারা।