ঢাকা | বঙ্গাব্দ

গ্রাহকের ৩ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে সাতক্ষীরায় "বুশরা ও এম ,আর বিজনেস গ্রুপের" পলায়ন।

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Jul 28, 2025 ইং
গ্রাহকের ৩ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে সাতক্ষীরায় "বুশরা ও এম ,আর বিজনেস গ্রুপের" পলায়ন। ছবির ক্যাপশন: সাতক্ষীরার "বুশরা ও এম ,আর বিজনেস গ্রুপ।
ad728
গ্রাহকের ৩ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে সাতক্ষীরায় "বুশরা ও এম ,আর বিজনেস গ্রুপের" পলায়ন।

হাফিজুর রহমান, (সাতক্ষীরা ) প্রতিনিধিঃ

সাতক্ষীরার বিভিন্ন উপজেলার হাজার, হাজার গ্রাহকের জমা করা ৩ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গা ঢাকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বুশরা ইসলামী মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ এবং এম, আর, বিজনেস গ্রুপের চেয়ারম্যান সাবেক ছাত্রশিবির নেতা ইকবাল কবির পলাশ এবং শেখ শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। 

সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধন না নিয়েই ২০০২ সাল হতে প্রথমে বুশরা সমবায় সমিতির সাইন বোর্ডের আড়ালে লাখে প্রতি  মাসে সাড়ে ৩ হাজার টাকা মুনাফার প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে প্রথমে কালিগঞ্জ উপজেলা থেকে শুরু করে। 

পরবর্তীতে জেলা জুড়ে প্রতিটি থানার হাজার, হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে ডিপোজিট জমা রেখে হাজার হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করেছেন প্রতিষ্ঠান দু,টি। 

সমবায় সমিতি আইন ২০২৩ সংশোধিত অনুযায়ী ব্যাংকিং কার্যক্রমে জি,পি,এস, এফ,ডি,আর ও সঞ্চয় হিসাব খুলে কোন গ্রাহকদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করা যাবে না। 

অথচ এখানে এসব নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে ক্ষুদ্র ব্যবসা ঋণের নামে ইসলামী নাম ব্যবহার করে গ্রামের সহজ সরল, দিনমজুর, কৃষক, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী লোকদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আমানত গ্রহণ করে জমি কিনে প্লট, ফ্ল্যাট বিক্রির ব্যবসাসহ পরিবহন ব্যবসার নামে পৃথক আরো একটি এম,আর পরিবহনের নামে এম ,আর বিজনেস গ্রুপ খুলে সাতক্ষীরা জেলা জুড়ে আমানত সংগ্রহ করার জন্য মোড়ে মোড়ে মোড়ে চোখ ধাঁধানো অফিস খুলে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। 

জানা যায়, ২০০২ সালে বুশরা সমবায় সমিতর  কার্যক্রম শুরু করলেও ২০০৯ সালের ৩ নভেম্বর ৩০ /৭ (সাত)  নং নিবন্ধন লাভ করে কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। 

সোমবার সরে জমিনে বিভিন্ন এলাকায় গেলে ভুক্তভোগীরা সাংবাদিকদের জানান ২০০২ সালে কালিগঞ্জ উপজেলা ফুলতলায় প্রথমে বসুরা সমবায় সমিতির প্রধান কার্যালয় অফিস গড়ে তোলা হয়। 

লাখে প্রতিমাসে সাড়ে ৩  হাজার টাকা মুনাফা দেওয়া শুরু করে গ্রাহকদের টাকা জমা করে মন জয় করে নেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় অধিক মুনাফার আসায় প্রবাসের আয়ের টাকা, চাকরিজীবীদের পেনশনের টাকা, জমি বিক্রির টাকা, ব্যাংকের টাকা  তুলে সমিতিতে ডিপোজিটের হিড়িক পড়ে যায়। 

সুযোগ কাজে লাগিয়ে এক লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অংকের টাকা আমানত হিসেবে হাতিয়ে নেয়। 
এই সমস্ত টাকা আমানত হিসেবে গ্রহণের সময় একটি রশিদ ছাড়া গ্রাহককে আর কিছু দেয়নি। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায় নলতার সম্রাট" সু"র মালিক রহমত সাড়ে ৬ লক্ষ, সোনাটিকারীর স্বপন ৮০ লক্ষ,  জাহাঙ্গীর ৬ লক্ষ, হাকিম ৫ লক্ষ, শফিকুল ইসলাম শফি থেকে ১৫ লাখ টাকা, নলতা এবাদুল শহ আরো অনেকের,কালীগঞ্জের মুজিব ৫০ লক্ষ, মিজান ২২ লক্ষ, আমিন ১৭ লক্ষ ,রশিদ ৪ লক্ষ, চাঁচাই গ্রামের রাশেদুল ৫০ হাজার, উভাকড় গ্রামের উদ্ভব চন্দ্র ৪ লক্ষ এবং ভাড়া সিমলার শহিদুল ৮ লক্ষ টাকা জমা করা ছাড়াও জেলা জুড়ে এইভাবে হাজার হাজার গ্রাহক হাজার ,হাজার কোটি টাকা জমা করেন। 

আর এই সমস্ত টাকা দিয়ে সাতক্ষীরা ,খুলনা শহরে জায়গা কিনে ফ্লাট এবং প্লটের ব্যবসা শুরু করে। 
পরবর্তীতে এম, আর পরিবহন চালু করে সেখান থেকে মোটা অংকের শেয়ার বিক্রির প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে এম, আর বিজনেস গ্রুপ নামে মোড়ে ,মোড়ে আরো একটি অফিস খুলে লাখে  ১৫ শত টাকা মুনাফার শর্তে  আমানত সংগ্রহ করে। 

হঠাৎ করে বছর ৩ আগে থেকে আমানতের উপর লভ্যাংশ কমিয়ে লাখে ১৫/১২শত টাকা দেওয়া শুরু করে । 

গত জুলাই আন্দোলনের পর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার দেশ ছাড়া হলে গত ৫/৬ মাস আগে থেকে নামমাত্র অফিস খোলা রেখে গ্রাহকদের মূল টাকা এবং লভ্যাংশের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়ে গা' ঢাকা দিয়েছে। 

বর্তমান মাসে দুই একবার অফিস খুললেও অফিসের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাওয়া যায় না এমনকি বুশরা এবং এম আর বিজনেস গ্রুপের চেয়ারম্যান ইকবাল কবির পলাশ এবং শেখ শরিফুল ইসলামের ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন দিলেও রিসিভ করেননি। 

এদিকে আমানতের এবং লভ্যাংশের টাকা না পেয়ে গ্রাহকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। 
আর বলছে আরডিপি এবং বর্ষা এনজিও যেভাবে গ্রাহকদের বোকা বানিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে  এবার ও এইভাবে এরাও পার পেয়ে যাবে। 

ঘটনার সত্যতা জানার জন্য বুশরা ইসলামের মাল্টিপারপাস কোঅপারেটিভ সোসাইটির চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলামের ব্যবহৃত ০১৭১৫১৩৩৭৫১ এবং এম,আর বিজনেস গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইকবাল কবির পলাশের ব্যবহৃত ০১৩১৮৩৩৮০৮০ মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি। 

নিয়ম হিসেবে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা প্রতিবছর অডিট করার সময় সমিতির মূলধন এবং সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দেওয়ার কথা থাকলেও সে ব্যাপারে মোটা অংকের নগদ নারায়ণে দায় সারা অডিটের কারণে গ্রাহকের এই ভোগান্তি বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। 

এ ব্যাপারে অনেক গ্রাহক চেয়ারম্যান এবং নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পে অভিযোগ জানাইছেন বলে জানান। 

তবে এ বিষয়ে সত্যতা জানার জন্য উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আকরাম হোসেনের নিকট জানতে তার অফিসে গেলে পাওয়া যায়নি। 

তার ব্যবহৃত ০১৯৭৩১২১২৭৫ মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি সঠিকভাবে অডিট হয়েছে বলে জানালেও সম্পদ, টাকা, গ্রাহকের হিসাব এবং পরিধি সম্পর্কে প্রশ্নের কোন সদুত্তর মেলেনি। 

টাকা আদায়ের জন্য ভুক্তভোগী গ্রাহকরা গত কয়েকদিন আগে কালিগঞ্জ ফুলতলা সড়কে এম ,আর পরিবহন আটকে দেয়। 

পরের টাকা দেওয়ার স্বার্থে আবার ছাড়িয়ে নেয় বলে ভুক্তভোগীরা জানান।

এসময়/ 

নিউজটি পোস্ট করেছেন : মোঃ মনিরুজ্জামান

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
লাভ বেশি হওয়ায় শার্শায় বেড়েছে ড্রাগন ফলের চাষ।

লাভ বেশি হওয়ায় শার্শায় বেড়েছে ড্রাগন ফলের চাষ।