নেছারাবাদে মাদক, চাঁদাবাজি ও জমি দখলের বিরুদ্ধে মানববন্ধন।
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সোহাগদল ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মাঝি বাড়ি এলাকায় মো. শাহিন ও তার স্ত্রী নাজমা বেগমের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, জমি দখল ও হিন্দু সম্প্রদায়কে জীবননাশের হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকাল ১১টায় আয়োজিত এই মানববন্ধনে হিন্দু ও মুসলমান—দুই সম্প্রদায়ের শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
প্রতিবাদকারীরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে মো. শাহিন ও তার স্ত্রী এই এলাকায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। এছাড়া, হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের সম্পত্তি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই দম্পতির বিরুদ্ধে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম, যুবসমাজকে বিপথে ঠেলে দেওয়া এবং সামাজিক পরিবেশ বিনষ্ট করার অভিযোগ করেন এলাকার সাধারণ মানুষ।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও ভুক্তভোগীরা বলেন, শাহিন একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি। তার হাত ধরে এলাকার কিশোর ও তরুণরা মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে, যা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মারাত্মক হুমকি। শুধু হিন্দু সম্প্রদায় নয়, মুসলমান পরিবারেরও অনেক সদস্য তার অরাজকতায় অতিষ্ঠ। এলাকাবাসীর দাবি, শাহিন ও তার স্ত্রীর অপতৎপরতার কারণে পুরো এলাকায় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে ভাটার টান পড়েছে।
মানববন্ধন চলাকালে প্রশাসনের প্রতিনিধিরাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, বহুবার অভিযোগ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। আমরা চাই, অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে মো. শাহিন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
বক্তারা আরও জানান, যদি দেরি করা হয় বা প্রশাসন নিশ্চুপ থাকে, তাহলে এলাকার যুব সমাজ পুরোপুরি ধ্বংসের দিকে চলে যাবে। তারা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, এই মুহূর্তে যদি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তাহলে আমরা আমাদের স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে এখানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করতে হবে। তাই আমারা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী সকলেই বলেন, মাদক, সন্ত্রাস ও জমি দখলের মতো অপরাধ দমনে হিন্দু-মুসলমান এক হয়ে কাজ করতে প্রস্তুত। তারা সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উত্থাপিত অভিযোগগুলো গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হবে এবং তদন্ত শেষে অপরাধ প্রমাণিত হলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই মানববন্ধনের মাধ্যমে এলাকাবাসী তাদের ঐক্য ও সামাজিক দায়িত্ববোধের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন—যেখানে অপরাধের বিরুদ্ধে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছেন।
এসময়/