মোঃ শাহজাহান বাশার সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
অবৈধ গ্যাস ব্যবহার রোধে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি-এর ধারাবাহিক সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাজধানীসহ নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর ও সাভার এলাকায় একাধিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পৃথক পৃথক অভিযান পরিচালনা করে শতাধিক অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে এবং লক্ষাধিক টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জে দুই হোটেল ও একটি ডাইং ফ্যাক্টরিতে অভিযান, নারায়ণগঞ্জের বাড়ৈভোগ, ফতুল্লা এলাকায় মেসার্স বিসমিল্লাহ হোটেল অবৈধভাবে আবাসিক লাইন থেকে ঘণ্টায় ৯২ ঘনফুট হিসেবে মাসে প্রায় ৬৫০.২৪ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করছিল। অভিযানকালে লাইনটি পুনরায় বিচ্ছিন্ন ও কিলিং করা হয়। এ ঘটনায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
একই এলাকায় মেসার্স মায়ের দোয়া হোটেলকেও ঘণ্টায় ২৪৭ ঘনফুট হিসেবে মাসে ১,৭৪৫.৭৭ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করতে ধরা হয়। প্রতিষ্ঠানটির লাইনও বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

অন্যদিকে, শাসনগাও, চাঁদনী হাউজিং এলাকায় মেসার্স এম আর ইয়ার্ণ ডাইং নামের প্রতিষ্ঠানে ১ টন ক্ষমতাসম্পন্ন বয়লারে ঘণ্টায় ৩,০০০ ঘনফুট হারে গ্যাস ব্যবহার করতে দেখা যায়। সংযোগটি তাৎক্ষণিকভাবে বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ তিনটি প্রতিষ্ঠানে মাসে প্রায় ৭.১০ লক্ষ টাকার গ্যাস সাশ্রয় সম্ভব হয়েছে বলে তিতাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
অন্য এক অভিযানে জনাব হাসিবুর রহমান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট-এর নেতৃত্বে মুন্সিগঞ্জের জামালদি, গজারিয়া এলাকায় ৫টি প্রতিষ্ঠানের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এর মধ্যে একটি মার্বেল ফ্যাক্টরি, তিনটি হোটেল-রেস্টুরেন্ট এবং একটি বেকারি রয়েছে। এসময় ৬০ ফুট পাইপলাইন জব্দ করা হয় এবং ১ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
তিতাস গ্যাসের ভিজিল্যান্স বিভাগ সাভারের কলমা এলাকায় উইন্টার ড্রেস লিমিটেড কারখানায় হঠাৎ অভিযান চালায়। কারখানার গ্যাস ব্যবহারে নানা অনিয়ম ধরা পড়ে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট জোনকে অবহিত করা হয়েছে।
অন্যদিকে, রাজধানীর ধানমন্ডির গ্রীন রোডের একটি বারোতলা ভবনে তিনটি চুলা অবৈধভাবে চালানো হচ্ছিল। তিতাস টিম তাৎক্ষণিকভাবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দুইটি রাইজারের লক উইং কর্কে সীল স্থাপন করে এবং জব্দ করা রেগুলেটর সংশ্লিষ্ট জোনে জমা দেয়।
গাজীপুরের টেকনগপাড়া ও তেলিপাড়া এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈকত রায়হানের নেতৃত্বে আরেকটি অভিযান চালানো হয়। এ সময় প্রায় ৭০টি ডাবল চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং ৩০০ ফুট পাইপলাইন জব্দ করা হয়।
তিতাস গ্যাস জানিয়েছে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৯ আগস্ট পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে ২৯৭টি শিল্প, ৩৬৪টি বাণিজ্যিক ও ৬৫,৩২৯টি আবাসিকসহ মোট ৬৫,৯৯০টি অবৈধ সংযোগ এবং ১,২৫,২২৬টি বার্নার বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় প্রায় ২৫০.৫ কিলোমিটার পাইপলাইন অপসারণ করা হয়েছে।
তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অবৈধ গ্যাস ব্যবহার রোধে তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং নিয়মিত ভিজিল্যান্স টিম মাঠ পর্যায়ে কাজ করবে।