চোখের জলে রাজশাহীতে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন পাইলট তৌকির।
পাভেল ইসলাম মিমুল, স্টাফ রিপোর্টারঃ
বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরের জানাজার নামাজ রাজশাহী নগরীর রেলগেটে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪ টায় জানাজা শেষে নগরীর সপুরা গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এদিকে রাজধানীর উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারানো ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরসহ নিহত সকলের জন্য রাজশাহী নগরীতে নামাজে অঝোরে কেঁদেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
নামাজ ও দোয়া শেষে মুসল্লিরা প্রতিবেদককে বলেন, উত্তরার মর্মান্তিক ঘটনা আমরা মনে করতে পারছি না। ছোট ছোট শিশুরা কীভাবে মারা গেল, খুব কষ্ট হচ্ছে আমাদের।
তারা বলেন,ফেসবুকে দেখেছি পাইলট তৌকির লাফিয়ে নিজে বেঁচে যেতে পারতেন।
কিন্তু তিনি লাফ না দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বড় ক্ষতি থেকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেই জীবন দিলেন।
তার এ বীরত্বের পুরস্কার পরিবারকে দেওয়া উচিত।
মুসল্লিরা বলেন,পাইলট তৌকিরকে আমরা কয়েকবার দেখেছি।
গত ঈদে এসেছিল।
এখানে তাদের নিজস্ব জায়গায় বাসা করছে।
খুবই ভাল ছিল ছেলেটা।
এত অল্প বয়সে জীবন চলে গেল তার।
আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করছি, যেন আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করেন।
আর তার পরিবারের জন্য সরকার যেন ভাল একটা ব্যবস্থা করেন, এটাই দাবি জানাই।
জানাজার সময় পরিবারের সদস্যরা স্টেডিয়ামের ভেতরে তাকে শেষ বারের মতো দেখার সুযোগ পান।
পরবর্তীতে র্যাব-৫ এর একটি গাড়িতে করে তাদের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে পুত্রশোকে পাইলট তৌকিরের মা সালেহা খাতুন কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ছেলেকে সম্বোধন করে তিনি আহাজারি করে বলেন, ‘আব্বা, তুমি কোথায় গেলে?
তুমি শহীদ হয়েছ, আব্বা!’
তার ছোট বোন বৃষ্টি খাতুনও কান্নায় ভেঙে পড়ে বারবার বলেন, ‘ও ভাইয়া, ও ভাইয়া! তুই সকালে একবার কল দিলি না কেন ভাই?
একটু কথা বললি না কেন?’
জানাজার পূর্বে তৌকিরের বাবা তহুরুল ইসলাম সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে খুব ভদ্র ও নম্র ছিল।
তার আচার-আচরণে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে ক্ষমা করে দেবেন।’
এই কথা বলার সময় তিনিও কান্নায় ভেঙে পড়েন।
জানা গেছে, পাইলট তৌকিরের বংশীয় বাসা চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
তবে তার পরিবার রাজশাহী নগরীর উপশহর এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করত।
সপুরা ছয়ঘাটি মোড়ে তাদের নিজস্ব বাসার নির্মাণ কাজ চলছে।
এসময়/